বাজারে সবজিতে আগুন, মিলছে আকারে ছোট ইলিশ

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ যশোরে সবজির অগ্নিমূল্য সাধারণ মানুষকে বেকায়দায় ফেলেছে। ৭০/৮০ টাকা কেজির নিচে কোনো মানসম্মত সবজি মিলছে না। সেই সাথে আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বেড়েছে ডিম ও খামারের মুরগির দাম। এদিকে, ভরা মৌসুমে যশোরে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে ঠিকই,তবে অধিকাংশই ছোট সাইজের। ভোক্তাদের অভিযোগ, বাজার তদারকির গাফিলতিতে খুচরা ব্যবসায়ীরা আড়ত থেকে কম দামে পেঁয়াজ কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন। রোববার যশোর শহরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

যশোর শহরের বড় বাজারে ৭০/৮০ টাকা কেজির নিচে কোনো ধরনের মানসম্মত সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা বিক্রেতা নাসির আলী জানান, বাজারে সবজির আমদানি খুব কম। তিনি রোববার প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি করেছেন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, গাজর ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৭০ টাকা।

সবজির আড়ত বড় বাজার এইচএমএম রোডের ‘আরিফ ভাণ্ডার’- এর অন্যতম স্বত্বাধিকারী সুজিত কাপুড়িয়া বাবলু জানান, সাম্প্রতিক অবিরাম বৃষ্টিতে যশোর অঞ্চলের বেশিরভাগ সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে যা বাজারে আসছে তার অধিকাংশই উঁচু জায়গার ফসল। তাছাড়া অন্যান্য জেলা থেকে আমদানি হয়ে বড় বাজারে সবজি আসছে, এ কারণে দাম বেড়ে গেছে।

এদিকে এ সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজিতে আরও ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। অবিরাম বৃষ্টির কারণে রাজবাড়ি জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় যশোরে গত সপ্তাহে প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছিল ৭০ টাকায়। এর মধ্যে রোববার বড় বাজারে আড়তে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজিতে আরও ৫ টাকা বাড়িয়ে ৭৫ টাকায় বিক্রি করছেন।

বড় বাজার কালীবাড়ি মার্কেট এলাকার আড়ত ‘নিতাই গৌর ভাণ্ডার’-এর অন্যতম স্বত্বাধিকারী নিতাই সাহা জানান, তিনি রোববার তার আড়তে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারি দর ৬৫/৬৬ টাকায় বিক্রি করেছেন। এ সময় বাজার করতে আসা জনৈক ক্রেতা হাফিজ উদ্দিন জানান, বাজার তদারকিতে সরকারি সংস্থাগুলোর গাফিলতার কারণে খুচরা বিক্রেতারা পেঁয়াজের দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। আরেক ক্রেতা রবিউল ইসলাম জানান, বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বেশি, এত বেশি দাম দিয়ে সবজি কিনে খাওয়ার মতো আর পরিস্থিতি নেই।

বাজারে এ সপ্তাহে ফের বেড়েছে ডিমের দাম। প্রতি হালিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে খামারের মুরগির লাল ডিম ৪৮ টাকা। বেড়েছে খামারের মুরগির দামও। এ সপ্তাহে সোনালি ও লেয়ার মুরগির প্রতি কেজিতে ২০ টাকা করে বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকা।

ভরা মৌসুমে যশোরে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। তবে ছোট ইলিশের ছড়াছড়ি। রোববার বড় বাজার মাছবাজারে নদীর ইলিশ ১ কেজি ওজন ২১শ/২২শ টাকা, ৮শ গ্রাম ওজন প্রতি কেজি ১৮শ টাকা, ৩পিস কেজি ১ হাজার/১২শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তাছাড়া সাগরের ইলিশ ৪/৫ পিস কেজি ৮শ/সাড়ে ৮শ টাকা ও ৫/৬ পিস কেজি ৫শ/৬শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আড়তদার পিয়ার মুহাম্মদ জানান, নদীতে জেলেরা ঠিকমত মাছ পাচ্ছেন না। তিনি আশা করছেন আগামী সপ্তাহে যশোর বড় বাজারে বড় সাইজসহ সব ধরনের নদী ও সাগরের ইলিশের সরবরাহ বাড়বে এবং দামও কমে আসবে।