মেজর পরিচয়ে দন্ত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও টাকা আত্মসাৎ,‘পেশাদার প্রতারক’ বেনজির আটক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক দন্ত চিকিৎসককে ধর্ষণ, অর্ধকোটি টাকা প্রতারণা করে আত্মসাৎ এবং বিশেষ মুহূর্তের ছবি প্রকাশের ভয় দেখানোর অভিযোগে এক প্রতারককে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত ব্যক্তির নাম বেনজির আহমেদ (৪২)।

সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল যশোরের কর্মকর্তারা গতকাল মঙ্গলবার ভোরে নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করেন। বেনজির আহমেদ একই গ্রামের জামির হোসেনের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী দন্ত চিকিৎসক নারী গতকাল সোমবার রাতে প্রতারক বেনজির আহমেদের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তার ক্লিনিকটি যশোর শহরের ঘোপ এলাকায় অবস্থিত।

মামলায় ভুক্তভোগী দন্ত চিকিৎসক উলে্লখ করেছেন, তার ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসার সূত্রেই বেনজির আহমেদের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সময় বেনজির আহমেদ নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর হিসেবে পরিচয় দেন এবং জানান যে তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি ওই চিকিৎসকের পেছনে লেগে থাকেন এবং তাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখান।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, প্রেমের ফাঁদে ফেলে বেনজির আহমেদ ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত একাধিকবার যশোর শহরের জাবীর হোটেলে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। এ সময় বেনজির আহমেদ গোপনে মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ওই চিকিৎসকের নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে এই ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীর বাসায় গিয়েও তিনি তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

এছাড়াও, বেনজির আহমেদ ওই দন্ত চিকিৎসককে আমেরিকায় নিয়ে গিয়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে নগদ ও ব্যাংকের মাধ্যমে তার কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। একইসঙ্গে কৌশলে ভুক্তভোগীর স্বাক্ষর করা দুটি অলিখিত চেকও নিয়ে নেন। পরবর্তীতে চিকিৎসক তার টাকা ও চেক ফেরত চাইলে বেনজির আহমেদ তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এমনকি উল্টো তাকে হত্যার হুমকি দেন এবং গোপনে ধারণকৃত ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। পরে ওই দন্ত চিকিৎসক খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, বেনজির আহমেদ আসলে সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য নন, বরং একজন প্রতারক এবং তার কোনো সরকারি চাকরিও নেই।

সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল সূত্র জানিয়েছে, আটক বেনজির আহমেদ মূলত একজন পেশাদার প্রতারক। তার বিরুদ্ধে এর আগেও একটি পর্নোগ্রাফি আইনের মামলা এবং দুটি প্রতারণাসহ মোট চারটি মামলা রয়েছে।