দুই ছেলের কাছে ভরণপোষণ চেয়ে আদালতে ৭৩ বছর বয়সী মা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বামী হারানোর পর যে ভিটেমাটিকে শেষ আশ্রয় ভেবেছিলেন, সেই ভিটেমাটি থেকেই বিতাড়িত হয়েছেন ৭৩ বছরের বৃদ্ধা রিজিয়া বেগম। শেষ জীবনে এসে দুই পুত্র ও দুই পুত্রবধূর কাছে ভরণপোষণের দাবিতে তাকে দ্বারস্থ হতে হয়েছে আদালতের।

রোববার অভয়নগর আমলী আদালতে তিনি তার সন্তানদের বিরুদ্ধে পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইনে এই মামলা দায়ের করেছেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার মন্ডল অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের প্রতি সমন জারির আদেশ দিয়েছেন।

রিজিয়া বেগমের অভিযোগ, আট বছর আগে তার স্বামী হাচান আলী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি তার ভিটাতে বসবাস করছিলেন। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস, তার দুই পুত্র ফারুখ হোসেন ও বিল¬াল হোসেন এবং পুত্রবধূ আছিয়া বেগম ও রেহেনা বেগম (যারা অভয়নগর উপজেলার ধোপাদি গ্রামের বাসিন্দা) তার প্রতি অত্যন্ত নিষ্ঠুর আচরণ শুরু করেন। পুত্রবধূরা তাকে দিয়ে বাড়ির ঝিয়ের মতো কাজ করাতেন। কাজ করতে না পারলে তাকে গালাগাল করতেন এবং নাতি-নাতনিদেরও তার কাছে যেতে দিতেন না। বিষয়টি পুত্রদের জানালেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি।

২০২২ সালের ১৩ মার্চ সকালে বাড়িতে কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে রিজিয়া বেগমের একটি পা ও একটি হাত ভেঙে যায়। এই অবস্থায়ও পুত্র ও পুত্রবধূরা তার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করেননি। শুধু তাই নয়, হাত-পা ভাঙা অবস্থাতেই একই বছরের ১৬ এপ্রিল তাকে স্বামীর ভিটা থেকে নির্মমভাবে তাড়িয়ে দেন তারা।

এরপর থেকে রিজিয়া বেগম তার বিবাহিতা কন্যাদের বাড়িতে আশ্রয় পান। মেয়েরাই তার চিকিৎসা ও দেখভালের দায়িত্ব নেন। দীর্ঘ তিন বছর পর গত ১৮ মে সকালে কন্যারা তাদের মাকে নিয়ে ভাইদের বাড়িতে যান। সেখানে রিজিয়া বেগম তার পুত্র ও পুত্রবধূদের কাছে ভরণপোষণ দাবি করলে তারা তা দিতে অস্বীকার করেন এবং তাকে আবারও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। উপায়ান্তর না দেখে, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে রিজিয়া বেগম বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ন্যায়বিচারের আশায়।