শাহাদৎবার্ষিকীতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ

0

স্টাফ রিপোর্টা।। স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে দেশি-বিদেশি চক্রান্তে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য তাকে হত্যা করে।
স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। তিনি দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা। ক্ষমতায় থাকাকালীন জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়।

দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করছে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো। গ্রহণ করা হয়েছে বিস্তারিত কর্মসূচি। আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। নেতাকর্মী কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন। সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধি প্রাঙ্গণে আসেন। পুষ্পমাল্য অর্পণের পর প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন তারা। পরে সমাধি প্রাঙ্গণে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলে অংশ নেন তারা।
সকালে প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জিয়াউর রহমানের সমাধি প্রাঙ্গণে নেতা-কর্মীদের আসতে দেখা গেছে। এ সময় তাদের পোশাকে দেখা গেছে কালো ব্যাজ। মিছিলে নেতাকর্মীরা ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, লও লও লও সালাম’, ‘জিয়া তোমায় ভুলিনি, ভুলব না, স্বাধীনতার অপর নাম জিয়াউর রহমান’সহ ইত্যাদি স্লোগানও ধরেন।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত – লোকসমাজ

 

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা উপজেলাগুলোতেও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী।

যশোর : সকাল থেকে বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে শুরু হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল, দলীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন, স্বেচ্ছায় রক্তদান, দোয়া মাহফিল ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ।
সকালে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে দলীয় ও কালো উত্তোলন এবং নেতাকর্মীদের কালো ব্যাচ ধারণের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর জেলা বিএনপির আয়োজনে এবং জেলা ওলামা দলের ব্যবস্থাপনায় দলীয় কার্যালয়ে শহীদ জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দলীয় কার্যালয়ের সামনে জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, শেখ শহিদুল বারী রবু প্রমুখ।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা ছাত্রদল রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করেছে শুক্রবার

এরপর অধ্যাপক নার্গিস বেগম এবং অনিন্দ্য ইসলাম অমিত যশোর পৌর এলাকাসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। এছাড়া বাদ জুমা মসজিদে মসজিদে শহীদ জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মুনাজাত করা হয়।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর নগর বিএনপির খাদ্য বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস বেগম – লোকসমাজ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী-২০২৫ পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবসটি স্মরণে পদযাত্রা বের হয় – লোকসমাজ

দিনটি উপলক্ষে শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে পদযাত্রা বের হয়। এটি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শহীদ জিয়াউর রহমান কর্তৃক স্থাপিত ভিত্তিপ্রস্তরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর নেতৃত্বে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হকসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।

পরে একে একে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জিয়া পরিষদ, ইউট্যাব, জাতীয়তাবাদী কর্মকর্তা কর্মচারী ফোরাম, সাধারণ কর্মচারী ফোরাম, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, বেগম খালেদা জিয়া হল,উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা সিদ্দিকা (রা) হল, আইন বিভাগ, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ও ইবি শাখা ছাত্রদল।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মাদ নসরুল্লাহ বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানকে আজকের দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি চেয়েছিলেন একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার। যেখানে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ পরিচালনা করবেন। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন করবেন। দেশের ক্রান্তিলগ্নে তিনি জোর করে ক্ষমতা গ্রহণ করেননি। বরং দেশের মানুষ তাদের অর্থনৈতিক মুক্তি, রাজনৈতিক মুক্তির জন্য তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক অবস্থার বাইরে প্রশাসনের উদ্যোগে তাকে স্মরণ করছি। কারণ স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছেন। শহীদ জিয়াউর রহমানের লক্ষ্য ছিলো আধুনিক ও ইসলামী শিক্ষার সমন্বয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তোলা। আমরা বিশ্বাস করি তাঁর এই স্বপ্নকে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারবো।এছাড়া শহীদ জিয়াউর রহমান তিনি বাংলাদেশে যে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করে গেছেন তা প্রতিষ্ঠায় এদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবে।

আয়োজন শেষে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনে গরীব ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

এদিন শহীদ জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনায় জুমা বাদ কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, রাজনৈতিক বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ বিভাগের শিক্ষক- শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা।