রুদ্র বৈশাখের বিদায়ে জৈষ্ঠ্যের প্রথম দিনে স্বস্তির বৃষ্টি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃষ্টি ঝরিয়ে স্বস্তি পরশ ছড়িয়ে রুদ্র বৈশাখের বিদায়ের বার্তা প্রকৃতি জানালো গতকাল পহেলা জৈষ্ঠ্যে। বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির পর আবার সন্ধ্যা ৭টার পরপরই শুরু হয় ভারী বৃষ্টিপাত।

দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছিল যশোরসহ আশপাশের এলাকা। গত কয়েক দিন এ জেলায় তাপমাত্রা ৪০ এর উপরে বা তার কাছাকাছি বিরাজমান ছিলো। খরতাপে অতিষ্ঠ জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে।

এ অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোরের আকাশে দেখা দেয় মেঘ, এরপর নামে ঝিরঝির বৃষ্টি। সন্ধ্যার পর তা রূপ নেয় মুষলধারায়। এতে খানিকটা স্বস্তি ফিরে পান গরমে হাঁসফাঁস করা যশোরবাসী।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সর্বশেষ গত ২৮ এপ্রিল যশোরে বৃষ্টিপাত হয়। তবে ওইদিন বৃষ্টির সাথে প্রচুর শিলা পড়ে। এর প্রভাবে প্রকৃতি কয়েক দিন স্বাভাবিক আবহাওয়ায়া থাকলেও পরে গরম বাড়তে থাকে।
চলতি সপ্তাহে বেশি সময় ধরে যশোরে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করে।

এ সময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তালিকায় পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গার সাথে শীর্ষে ছিল যশোর। খরতাপের প্রভাবে দিনের বেলায় রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকত, মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতেন না। কৃষি, শ্রমজীবী মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। বিদ্যুৎ সংকটও বাড়িয়ে দেয় জনদুর্ভোগ। শেষমেষ প্রকৃতির খেলায় তার অবসান হয়েছে।

যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া অফিস জানায়, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত যশোরে যে বৃষ্টিপাত হয় তা রেকর্ড করার মতো ছিলো না। তবে রাতের মুষলধারার বৃষ্টি শেষ হলেই তা রেকর্ড করা হবে। সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে হঠাৎ করেই শুরু হয় বৃষ্টি । মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে ছিল ঠাণ্ডা বাতাস, যা একপ্রকার শীতলতার অনুভূতি এনে দেয়। দীর্ঘ এক মাসের খরতাপের পর এমন বৃষ্টি যেন যশোরবাসীর জন্য ছিল একরকম পরম আশীর্বাদ।

রাস্তায় বেরিয়ে আসা অনেকেই জানান, এমন বৃষ্টির জন্য তারা বহুদিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী কয়েকদিন বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। যশোরও তার ব্যতিক্রম নয়। দফায় দফায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

তবে একইসাথে তারা সতর্ক করেছে এসব ঝড়ো হাওয়ার সময় গাছপালা, বিলবোর্ড ও খোলা বৈদ্যুতিক তার থেকে দূরে থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের এ সময় সতর্ক করা হচ্ছে বলে আবহাওয়া অফিসের এক কর্মকর্তা জানান। জ্যৈষ্ঠের শুরুতে এই বৃষ্টিতে এ অঞ্চলের সবজি, পাটসহ অন্যান্য ফসলের জন্য বড় ধরনের উপকার হবে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।