শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে ফুটবলের হারানো ঐতিহ্যের প্রাণবন্ত নবজাগরণ

যশোরে নগর বিএনপি বৈশাখী ফুটবল উৎসব

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ ভুভুজেলা বাঁশির আওয়াজ, নানা রঙের প্ল্যাকার্ড হাতে দর্শকদের উচ্ছ্বাস আর বাদ্য দলের সুরেলা মূর্ছনায় গতকাল বিকেলে মুখরিত হয়ে উঠেছিল যশোরের ঐতিহ্যবাহী শামস-উল-হুদা স্টেডিয়াম। দীর্ঘকাল পর কোনো বড় ফুটবল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে স্টেডিয়াম জুড়ে ছিল বাঁধভাঙা উল্লাস। যশোর নগর বিএনপি আয়োজিত বৈশাখী ফুটবল উৎসবের ফাইনাল খেলাটি এভাবেই যশোরের ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে তাদের হারানো উন্মাদনাকে ফিরিয়ে আনে।

শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলাকে ঘিরে শহরজুড়ে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এই মেগা ইভেন্টের ফাইনালে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মুখোমুখি হয় ১ নম্বর ওয়ার্ড এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ড। বেলা চারটায় খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, দর্শক ও সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা আগে থেকেই স্টেডিয়ামের গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

তাপপ্রবাহের গরম উপেক্ষা করে নবীন প্রবীণ সব বয়সের ফুটবলপ্রেমীরা জড়ো হন স্টেডিয়ামে। প্রবীণদের মতে, এই দৃশ্য নব্বইয়ের দশকে শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামের সেই সোনালী অতীতকে মনে করিয়ে দেয়।
খেলা দেখতে আসা এনজিও কর্মী মাহাদি হাসান তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ২০১৬ সালের পর এই প্রথম তিনি স্টেডিয়ামে এসে খেলা দেখলেন। এই ফুটবল উৎসব যশোরের ফুটবল অঙ্গনে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। একইভাবে আবেগাপ্লুত মহিলা দর্শক শামসুন্নাহার তার শৈশবের স্মৃতিচারণ করে জানান, অনেক বছর পর স্টেডিয়ামে এসে তার নব্বই দশকের কথা মনে পড়ছে।

যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ এই আয়োজনের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, যুব সমাজকে বিপথ থেকে ফিরিয়ে এনে আলোর পথে আনতে এবং ফুটবলের মাধ্যমে তাদের মাঠে সংযুক্ত করতে আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত এই ফুটবল উৎসবের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক সোহেল মাসুদ হাসান টিটো জানান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া এ আয়োজন সম্ভব ছিল না।

তিনি বলেন, তাদের লক্ষ্য ছিল যশোরের ফুটবলকে তার আপন আঙিনায় ফিরিয়ে আনা এবং এই উদ্যোগের মাধ্যমে যশোরে ফুটবলের হারানো জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তার আশা, আগামীতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এবং যশোরের মাঠে ফুটবলের এই নবজাগরণ ধরে রাখা সম্ভব হবে।