চুয়াডাঙ্গায় ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

0

রিফাত রহমান,চুয়াডাঙ্গা॥ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় এক কিশোরীকে (১৫) ধর্ষণের দায়ে তার নিকট আত্মীয় আলতাপ হোসেনকে (৪৬) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালতের বিচারক। একই সাথে তাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত আলতাপ সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বুড়ি গোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালী গ্রামের বাসিন্দা। বিয়ের পর ২০০৮ সাল থেকে তিনি ঘরজামাই হিসেবে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা হুদাপাড়া গ্রামে বসবাস করে আসছিলেন।

চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পিপি এমএম শাহজাহান মুকুল বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণ মামলায় আলতাপ হোসেনকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানার আদেশ তার(দণ্ডিত ব্যক্তির) জীবদ্দশায় অথবা মৃত্যুর পরবর্তী পর্যায়ে প্রথম দায়দেনা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে বলে আদালতের বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছেন।

সর্বোপরি সাক্ষীর শুরু থেকে মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি বিধান করতে সক্ষম হয়েছি। সমাজে এ ধরনের ঘৃণিত অপরাধ আর যেনো না ঘটে এটা আমরা আশা করছি। ২০২৪ সালের ৭ মার্চ ভুক্তভোগী কিশোরীর মা আলমডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধিত ২০২০)-এর ৯(১) ধারায় মামলা করেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি গাংনী ইউনিয়নে ওই কিশোরীকে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের কয়েকদিন পর স্বামীর বাড়িতে অবস্থানকালে পেটে ব্যথা ও বমি বমি ভাব অনুভূত হলে প্রেগনেন্সি পরীক্ষার মাধ্যমে ২/৩ মাসের অন্তসত্ত্বার বিষয়টি জানাজানি হয় ।

ভুক্তভোগী জানায় যে, ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর তার মা তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে ওইদিন রাতে তার এক নিকট আত্মীয় বসতঘরে একা পেয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে ও পরে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ২/৩ মাসে ৭/৮ বার ধর্ষণ করে।

তদন্ত শেষে আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বাবর আলী ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৬ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেয়।

চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর এম এম শাহজাহান মুকুল জানান, ধর্ষণ মামলায় সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ খুশি। সমাজে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী রেবেকা সুলতানা জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই।