যশোরে ঈদের কেনাকাটায় ভোগান্তি যানজট

0

আকরামুজ্জামান ॥ ঈদের কেনাকাটাকে ঘিরে যশোর শহরের বেড়েছে মানুষের চাপ। এতে পুরো শহরজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ইজিবাইক ও রিকশার দাপটে শহরের অধিকাংশ সড়কে এখন পথচলা যেন দায়। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশও রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে। সামনে পরিস্থিতি আরও প্রকট হতে পারে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।

ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, ঈদকে সামনে রেখে হঠাৎ বেড়েছে ইঞ্জিন চালিত রিকশা ও ইজিবাইকের সংখ্যা। হাজার হাজার ইজিবাইকের কারণে শহরের দড়াটানা, আরএন রোড, এমএম আলী রোড, মুজিব সড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এতে ভোগান্তি চরমে ওঠেছে। বিশেষ করে শহরের ঈদগাহ মোড়, দড়াটানা মোড়, হাসপাতাল মোড়, চৌরাস্তা মোড়, মনিহার মোড় এলাকায় বেশি যানজট হচ্ছে।

ট্রাফিক পুলিশ জানিয়েছে ঈদের কেনাকাটা উপলক্ষে শহরের মার্কেটগুলোতে লোকসমাগম বেড়েছে। বেড়েছে শহরমুখী যানবাহনের সংখ্যা। বিভিন্ন মার্কেটের সামনে ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় গাড়ি পার্কিং করা হচ্ছে। এর ফলেও যানজট বেড়েছে।

যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মো. আবু হাসান বলেন, রাস্তার তুলনায় রিকশা, ইজিবাইক ও মাহেন্দ্রসহ ৩ চাকার যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে ইজিবাইকের কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজটের কারণে লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, যানজট নিরসনে জেলা সড়ক পরিবহন নিরাপত্তা কমিটির সভায় মহাসড়কে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, নসিমন, করিমন বন্ধ রাখার কথা থাকলেও এ আইন মানছেনা কেউ। বরং এর সংখ্যা আরও বেড়েই চলেছে। এরফলে শহরে মানুষের সাথে পাল্লা দিয়ে যানবাহনে সংখ্যাও বাড়ছে।

সোমবার সকাল থেকেই যশোর শহরের দড়াটানা, ঈদগাহ মোড়, এমএম আলী রোড, চৌরাস্তা এলাকায় দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। পরিস্থিতি এমন ছিলো ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়াও দায় হয়ে পড়ে।

দড়াটানা মোড়ে কথা হয় পথচারী আব্দুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, শহরের মনিহার এলাকা থেকে ইজিবাইকে উঠে চিত্রা মোড় পর্যন্ত আসতে সময় লেগেছে এক ঘন্টারও বেশি। এখন পায়ে হেঁটে মুজিব সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, ফুটপাত দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসার কারণে পায়ে হেঁটে যাওয়াও দুস্কর হয়ে পড়েছে। একই স্থানে কথা হয় রাজিয়া বেগম নামে আরেক পথচারীর সাথে। তিনি বলেন, ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ঈদের কেনাকাটার জন্য এসেছি। একদিকে বাজারে মানুষের চাপে পা ফেলা যাচ্ছেনা। তারপর শহরজুড়ে যানজট। এতে চরম বিরক্তি লাগছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, মনে করছি বাজার না করে বাড়ি ফিরে যায়।

এ বিষয়ে যশোর ট্রাফিক পুলিশের ইনসপেক্টর মাফুজুর রহমান বলেন, ঈদের কেনাকাটাকে ঘিরে যশোর শহরে গত দুদিনে মানুষের চাপ বেড়েছে। এসব মানুষ অধিকাংশই পায়ে হেটে এবাজার থেকে আরেক বাজারে আসা যাওয়া করছে। সাথে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা এসব কারণে যানজট বেড়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, যশোর শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অর্ধ শতাধিক ট্রাফিক পুলিশ দিনরাত পরিশ্রম করছেন। তারপরও মাঝেমধ্যে মানুষ ও যানবাহনের চাপে যানজটে ভোগান্তি হচ্ছে সত্য। তবে তা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম বলে জানান।

তিনি বলেন, শহরের ঈদগাহ মোড়, মুজিব সড়ক এলাকায় যানজটের আরেকটি কারণ হচ্ছে প্রেসক্লাবের সামনে প্রায়ই বিভিন্ন সংগঠনের মানববন্ধন কর্মসুচি পালন হয়। এসব কারনে অনেকটা সংকীর্ণ রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের চাপে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বিকল্প কিছু ভাবছে বলে তিনি জানান।

এ দিকে যানজটের কারণে অনেক ক্রেতা রাতের বেলায় ঈদের কেনাকাটা করতে বাজারে আসছেন বলে ব্যবসায়ীরা জানান। শহরের কালেক্টরেট মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী বলেন, দিনের বেলার চেয়ে রাতের বেলাতেও অনেক ক্রেতা আসছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে যানজটের ঝুক্কিঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে তারা এ কাজ করছেন। তবে সামনে সরকারি ছুটির পর থেকে শহরের মানুষের চাপ আরও বাড়বে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।