চিকিৎসক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

0

মফিজুল ইসলাম, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) ॥ শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নানা সমস্যায় জর্জরিত। চার লাখ মানুষের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালের চিকিৎসকরা কাক্সিক্ষত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসারের পোস্ট রয়েছে ২৩টি। এরমধ্যে ৯টি খালি। বাকি ১৪টির মধ্যে ১জন চিকিৎসক আছেন সাময়িক বরখাস্ত। ২ জন প্রেষণে (লোকাল অর্ডার) রয়েছেন ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালে ও ১জন জেলা সদর হাসপাতালে। ১১ জন কলসালটেন্ট থাকার কথা থাকলেও আছে ১জন। বাকি ১০টি পদ খালি। ১জন কার্ডিওলজিস্ট বা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ থাকলেও এ হাসপাতালটিতে সেবা দেন ২দিন, বাকি ৪দিন থাকেন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। এদিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ গাইনি পদও খালি রয়েছে দীর্ঘদিন। এতে হাসপাতালটিতে নিয়মিত হচ্ছে না গর্ভবতী নারীদের সিজারিয়ান অপারেশন।

হাসপাতালটিতে রোগী সবসময় থাকে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ বেশি। একে তো অতিরিক্ত রোগী, তার ওপর চিকিৎসক সংকট। ফলে যেসব চিকিৎসক দায়িত্বে থাকেন তাদের হিমশিম খেতে হয়। চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের আউটডোর চলে উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার দিয়ে। ফলে হাসপাতালে যথাযথ সেবা না পেয়ে অনেক রোগী ছোটেন বে-সরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে। এছাড়াও রয়েছে ফার্মাসিস্ট ও স্টোরকিপার সংকট। চার লাখ মানুষের বসবাস এ উপজেলায় মাত্র ৫০ শয্যার হাসপাতালের চিকিৎসকরা কাক্সিক্ষত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

দীর্ঘ দিন ধরে হাসপাতালটির প্যাথলজিতে রয়েছে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট সংকট। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে বাইরে থেকে বেশি দামে কিট কিনে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে র‌্যাবিজ (জলাতঙ্ক) ভাইরাসের টিকা সংকট। ফলে বিনামূল্যের এমন টিকা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। হাসপাতালে জলাতঙ্ক টিকা না থাকায় বাধ্য হয়ে বাইরের ফার্মেসি থেকে টিকা কিনে তা গ্রহণ করছেন রোগীরা। এদিকে হাম-রুবেলা ও পোলিও টিকাসহ ৩ধরণের টিকার সংকট রয়েছে।

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পুরাতন মডেলের একটি মেশিন দিয়ে এক্সরে করা হচ্ছে রোগীদের। কিন্তু রিপোর্ট সঠিক না আসায় বাইরে থেকে তিনগুন টাকা খরচ করে এক্সরে করতে হয়ে রোগীদের।

এতসব সংকট বা সমস্যার বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদ আল মামুন বলেন,‘হাসপাতালে চিকিৎসক,জনবলসহ বেশকিছু সংকট ও সমস্যা রয়েছে। ফলে কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করতে অসুবিধা হচ্ছে। তবুও সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সেবা দেওয়া সম্ভব তা দেওয়া হচ্ছে।

সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। অতিশীঘ্রই সকল সমস্যার সমাধান হবে বলে ধারণা করছি।’