২৫০ টাকা বস্তা দরে যশোরের হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে পারবেন চাষিরা

0

আকরামুজ্জামান ॥ উত্তরাঞ্চলে হিমাগার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন চলতি মৌসুমে প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণ খরচ ৩ টাকা বাড়িয়ে ৮ টাকা করলেও যশোরে বাড়ছে না। যশোরের হিমাগার ব্যবসায়ীরা গত বছরে নির্ধারিত বস্তা প্রতি ২৫০ টাকা দরেই আলু সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ অঞ্চলের চাষিদের আলু সংরক্ষণে উৎসাহিত করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে একাধিক কোল্ডস্টোরেজের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, দেশের সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদিত হয় উত্তরাঞ্চলে। ওই অঞ্চলের হিমাগার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন চলতি মৌসুমে সংরক্ষণ ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি কেজিতে আলু সংরক্ষণে খরচ হবে ৮ টাকা। যা ৫৫ কেজির বস্তার হিসেবে ৪৪০ টাকা। গত বছর এ দর ছিল ২৭৫ টাকা। তবে যশোরের হিমাগার মালিকরা গত বছরের দরেই আলু সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ বিষয়ে যশোরের ঝিকরগাছার রজনীগন্ধা কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার কাজী সাদিকুর রহমান জানান, তারা এখনও আলু সংরক্ষণে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়নি। আগের নিয়মে ৫৫ কেজির বস্তায় ২৫০ টাকা রেটে তারা আলু সংরক্ষণের সিদ্ধান্তে আছেন। তিনি বলেন, এ বছর যশোরে পর্যাপ্ত আলু চাষ হয়েছে। এই মুহুর্তে যশোরাঞ্চলের বাজারে যেসব আলু দেখা যাচ্ছে তা অধিকাংশ বাইরের। ফলে ইচ্ছা করলে যশোরের চাষি ও ব্যবসায়ীরা কোল্ডস্টোরেজে আলু রেখে বাড়তি লাভ করতে পারেন।
প্রায় একই কথা বলেন, যশোর সদরের রাজারহাট এ আর কোল্ড স্টোরেজের প্রতিনিধি মো. ইসতিয়াক। তিনি বলেন, তাদের হিমাগারে ৫৫ কেজির বস্তার ৪০ হাজার বস্তা আলুর ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। গত বছর অর্ধেক খালি ছিলো। এ বছর আলুর ফলন যেহেতু ভালো হয়েছে সে কারণে চাষি ও ব্যবসায়ীরা বেশ সাড়া দিচ্ছেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আমরা এখনো ভাড়া বৃদ্ধির কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছিনা। তবে অন্যবারের চেয়ে সংরক্ষণে কোল্ডস্টোরেজ কর্তৃপক্ষের খরচ বাড়বে বলেও তিনি আক্ষেপ করেন।
বাঘারপাড়ার গাইদঘাট এলাকার সরদার কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার পবিত্র কুমার দাস বলেন, আলু সংরক্ষণে আমরা এবার অনেক সাড়া পাচ্ছি। তবে অনেক চাষিই আলু পরিপক্ক না হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে তুলে বিক্রি করছে। এজন্য নির্দিষ্ট সময়ে সংরক্ষণযোগ্য আলু পাওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে যশোরে ১৫শ ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বারি আলু ৭ ডায়মন্ড কাডিনাল, বিএডিসি আলু-৮ সানসাইন, বারি আলু ২৫ স্টারিক্স ও বারি আলু-৯০ অ্যালুরেট।
ইতোমধ্যে মোট আবাদের ৪০ শতাংশ হারভেস্ট হলেও বাকি ৬০ শতাংশ এখনো ক্ষেতে রয়েছে।
অন্যদিকে এসব আলু সংরক্ষণে জেলায় মোট ১২ টি কোল্ডস্টোরেজ (হিমাগার) রয়েছে। এসব হিমাগার অধিকাংশই ফাঁকা রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. আবু তালহা বলেন, যশোরের চলতি মৌসুমে আলুর ভালো ফলন হয়েছে। এই মুহুর্তে বাজারে আলুর দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় আমরা কৃষককে হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। তবে অনেক চাষি বাড়িতে নিজস্ব প্রযুক্তিতে আলু সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি জানান।