সবজি : কেনা দামের চেয়ে ৩-৪ গুন বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমন ধান ফলনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ক্ষতি পুশিয়ে নিতে বেশি করে সবজি চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিরা সবজির বাম্পার ফলন পেয়েছেন। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর টানা তিন মাস চাষিরা আড়তে দিয়ে উচ্চমূল্য পেয়েছেন। বাজারে এখনও সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকায় গত জানুয়ারি থেকে দাম কমে তলানিতে এসে ঠেকেছে। এ সময় অনেক চাষি তাদের পণ্য পরিবহনে ভ্যান ভাড়া পর্যন্ত উঠাতে পারছেন না।
যশোরের বড় বাজারে পাইকারি বিক্রেতারা তাদের আড়ত থেকে ওলকপির কেজি আড়াই টাকা, টমেটোর কেজি ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা, শিমের কেজি ৫ টাকা, ভালোমানের বেগুনের কেজি ১০ টাকা,শসার কেজি ১০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস (৭০০/৮০০ গ্রাম) ৩ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস (৭০০/৮০০ গ্রাম) ৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এ দরে কিনে নিয়ে গিয়ে খুচরা বিক্রেতারা বিক্রি করছেন ৩-৪ গুন বেশি দামে।
গতকাল সোমবার ভোরবেলা বড় বাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
যশোরের বড় বাজারে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন চাষি ও ব্যাপারিরা ভ্যান ও নসিমনে করে সবজি এনে আড়তে আসেন বিক্রি করতে। আড়তদাররা কমিশনভিত্তিতে খোলা ডাকের মাধ্যমে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে চাষি বা ব্যাপারিদের সবজি বিক্রি করেন। গতকাল সোমবার সকালে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নের হুমাতলা গ্রামের চাষি শুকুর আলীর সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি এদিন বড় বাজার মাছবাজার রোডের আড়ত ‘মনিরামপুর ভান্ডারে’ সবজি নিয়ে আসেন। তার ক্ষেতের ওলকপি প্রতি কেজি ২ টাকা, ধনিয়া পাতা প্রতি কেজি ১৯ টাকা ও লাউ প্রতি পিস ৪ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
একই উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া গ্রামের ব্যাপারি পলাশ কুমার দাস জানান, তিনি গ্রামে আগাম টাকা দিয়ে চাষির সবজি ক্ষেত কেনেন। সোমবার তিনি মটরশুঁটি বিক্রি করেছেন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।
আড়তদার জহিরুদ্দিন কাজল জানান, তিনি খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ওলকপি প্রতি কেজি আড়াই টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৫ থেকে ৭ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ১০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ৫ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ১০ টাকা, মটরশূঁটি প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, শসা ১০ থেকে ১৫ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫ টাকা, লাউশাক ১৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তিনি আরও জানান, তার আড়তে বিক্রি করতে আনা চাষি ও ব্যাপারিদের সবজি খোলা ডাকে বিক্রি করে ৫০ পয়সা থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজিতে কমিশন নিয়ে থাকেন।
বড় বাজারে গতকাল সোমবার খুচরা সবজি বিক্রেতাদের ওলকপি প্রতি কেজি ২০ টাকা, টমেটো ২০ টাকা, গাজর ২০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মটরশূঁটি ৬০ টাকা, ফুলকপি ১৫ টাকা, বাঁধাকপি ১৫ টাকা, শিম ৩০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
অবশ্য খুচরা বিক্রেতারা জানান, বড় বাজারে রাস্তার ধারে যে বাড়ির সামনে বসে তারা বেচাকেনা করেন সেই বাড়িওয়ালাকে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া দিতে হয়। তাছাড়া গড়ে প্রতি দোকানে দুজন কর্মচারীর প্রতিদিন ১০০০ টাকা মজুরি এবং ইজারাদারকে দোকান প্রতি প্রতিদিন ৪০ টাকা খাজনা দিতে হয়, আরও দিতে হয় বৈদ্যুতিক লাইট ভাড়া।