নতুন বছরে জনআকাঙ্খা পূরণে সংস্কার নির্বাচন ও বাজার নিয়ন্ত্রণের প্রত্যাশা রাজনীতিকদের

0

আকরামুজ্জামান ॥ ছাত্র-জনতার গঅভ্যূত্থানের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এখন থেকে প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে যাত্রা শুরু করেছিল নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অর্ন্তবর্তী সরকার। গণ-অভ্যুত্থানের তিন দিনের মাথায় গঠিত সরকারের প্রতি তখন সাধারণ মানুষের সমর্থন যেমন দেখা গিয়েছিল, তেমন প্রত্যাশাও ছিল বিপুল।
দায়িত্বগ্রহণের সময় সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা, দ্রব্যমূল্য, অর্থনীতি, নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে দ্রুত পরিবর্তন আনাসহ নানান প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
তবে সরকারের এসব প্রতিশ্রুতির অনেকগুলোর মধ্যে তেমন কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি এই সাড়ে তিন মাসে, যা নিয়ে সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক মহলের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়।
এ অবস্থায় নতুন বছর-২০২৫ সালে সাধারণ মানুষের আকাঙ্খাপূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অতীতের ভুলত্রুটি শুধরে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে যশোরের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ প্রত্যাশা করেছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, সরকারের বিগত দিনের দায়িত্বকালীন সময়ের ব্যর্থতা বা সফলতা কী হয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে আশা করি নতুন বছরে জনগণের আকাঙ্খা বিবেচনায় নিয়ে সরকার নূন্যতম সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। এর পাশাপাশি জনদুর্ভোগ কমানোসহ আইন ও বিচারালয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দেশে স্বস্তি ফিরে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
বাংলাদেশেরে বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, নতুন বছরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের বড় প্রত্যাশা হচ্ছে নির্বাচন নিয়ে এখনও পর্যন্ত যে ধোঁয়াশা রয়েছে সেটি দূর করতে সরকার নতুন বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
তিনি বলেন, ড. ইউনুস সরকারের এই কয় মাসের শাসনামলে সবচেয়ে দুর্বলতার দিক যে কয়টি ছিলো তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা ছিলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারা। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। আশা করি নতুন বছরে অতীতের ভলুত্রুটি শুধরে এ বিষয়ে বেশি অ্যাড্রেস করবে সরকার।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা শাখার আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, নতুন বছরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২৪-এর গণআন্দোলনে শহীদদের আকাঙ্খাপূরণে যথাযথ গুরুত্ব দেবে বলে প্রত্যাশা করছি। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মানে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন তা করবে বলে আমরা মনে করি। কারণ যৌক্তিক সংস্কার ছাড়া অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এজন্য সরকার নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে নতুন বছরে বেশি মনোযোগী হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, বিগত ১৭ বছর ধরে এদেশের মানুষ তার মৌলিক, গণতান্ত্রিক অধিকার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এজন্য আমরা প্রত্যাশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন বছরেই জনগণের সেই প্রত্যাশিত ভোটের ব্যবস্থা করবে। এর বাইরে আইনশৃঙ্খলা ও দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
আর দলটির যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, বিগত দিনগুলোতে দেখে আসছি সরকারের অনেক দুর্বলতার কারণে ফ্যাসিবাদীরা সচিবালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। নতুন বছরে আমাদের প্রত্যাশা সরকার শিরদাঁড়া শক্ত করে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করবে। পাশাপাশি দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ভুমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন।