প্রাইভেট না পড়ায় শিক্ষকের প্রতিশোধ!

0

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)॥ মনিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ার খেসারত দিতে হলো নবম শ্রেণির ৩৭ পরিক্ষার্থীকে। অভিযোগ রয়েছে, প্রাইভেট না পড়ার প্রতিশোধ হিসেবে ছাত্রীদের বেকায়দায় ফেলতে বার্ষিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্ন করা হয়েছে সিলেবাস ও পাঠ্যবইয়ের বাইরে থেকে। ফলে ওই পরিক্ষার্থীরা অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়। ভুক্তভোগী ৩৭ পরীক্ষার্থী ওই শিক্ষককের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে।শিক্ষার্থীরা জানায়, মনিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক সাঈদুল ইসলাম নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান করেন। নবম শ্রেণির ছাত্রী (রোল নং-৩) ফাইরুজ ফাইজা অভিযোগ করে, নতুন কারিকুলাম বাতিল হওয়ার পর অক্টোবর মাসে তাদের নতুন করে সিলেবাস দেওয়া হয়। কিন্তু বিজ্ঞান শিক্ষক সাঈদুল ইসলামের পাঠদান অধিকাংশ ছাত্রী আয়ত্ব করতে পারেনি। ফলে নবম শ্রেণির ৬০ ছাত্রীর মধ্যে ২৩ জনকে শিক্ষক সাঈদুল ইসলাম বিদ্যালয়ে প্রাইভেট (জনপ্রতি মাসিক এক হাজার) পড়ান। সুমাইয়া আকতার জিম, অরনি জামান, সাদিয়া জামান লিজা, প্রিয়ন্তী, অনন্যা, মিমসহ অধিকাংশ ছাত্রী অভিযোগ করে, শিক্ষক সাঈদুল ইসলাম তার কাছে প্রাইভেট পড়ার তাগিদ দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সপ্তাহে তিনদিন করে মাসিক এক হাজার টাকায় প্রাইভেট পড়তে তারা অস্বীকৃতি জানায়। ফলে শিক্ষক সাঈদুল ইসলাম ওই ছাত্রীদের তিরষ্কার করাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি শুরু করেন। ফাইরুজ ফাইজা, সুমাইয়া আকতার জিমসহ অধিকাংশ ছাত্রী অভিযোগ করে, শিক্ষক সাঈদুল ইসলাম তাদেরকে হুমকি দিয়ে বলেন, পরীক্ষায় যেভাবে প্রশ্ন করব তা দেখে উত্তর দেওয়া তো দূরের কথা, প্রশ্ন দেখে তোমরা চোখে সরিসার ফুল দেখবে।
২৮ নভেম্বর অনুষ্টিত বিজ্ঞান পরীক্ষার কক্ষে প্রশ্ন পেয়ে ঠিকই চোখে সরিসারফুল দেখে পরিক্ষার্থীরা।
তারা জানায়, সিলেবাসের বাইরে এমনকি পাঠ্যবইয়ের বাইরে থেকে সব উল্টোপাল্টা প্রশ্ন দেওয়া হয়। যেকারণে প্রাইভেট না পড়া ছাত্রীরা অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়। ফলে ৩৭ পরিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রথমে প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত আবেদন করে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক মহিতোষ কুমার দে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক সাঈদুল ইসলাম জানান, তিনি মাত্র দুইমাস ২০ জন ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়িয়েছেন। তবে কোন ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেননি।
প্রধান শিক্ষক ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বাধ্য হয়ে ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গত সোমবার লিখিত অভিযোগ করে।
নির্বাহী অফিসার বিষয়টি নিয়ে বুধবার সকালে তার কার্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে নিয়ে বৈঠকে বসেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না জানান, বৈঠকে বিষয়টির সুরাহা হয়েছে। তিনি জানান, আগামীতে শিক্ষক সাঈদুল ইসলামকে নতুন দশম শ্রৈণির পাঠদানে বিরত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মহিতোষ কুমার দে জানান, ইতোমধ্যে শিক্ষক সাঈদুল ইসলামকে দশম শ্রেণির পাঠদান থেকে বিরত রাখা হয়েছে।