চরিত্র পাল্টায়নি রেলওয়ে পুলিশের

0

বিশেষ প্রতিনিধি॥ পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার আমলের সেই চরিত্র পাল্টায়নি পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের রেলওয়ে পুলিশের। তারা এখনো যাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণ, হকারের কাছ থেকে খাদ্যদ্রব্য জোর করে নিয়ে খাওয়াসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িয়ে আছেন।
যশোর থেকে খুলনা পর্যন্ত ট্রেন ভ্রমণ করে ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই অভিযোগ ট্রেনে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করা হকারদের।
গত ১৪ অক্টোবর মোংলা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশে ছেড়ে আসা মোংলা কমিউটার ট্রেনে যাত্রী ছিলেন এ প্রতিবেদক। দুপুরে মোংলা থেকে ছেড়ে আসে ট্রেনটি। ট্রেনের প্রথম বগিতে ওঠেন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এদের একজন ছিলেন সহকারী উপপরিদর্শক রাজিব। তাকে দেখা গেল হকার আসতেই তার কাছ থেকে গজা, শশাসহ নানা খাদ্যদ্রব্য জোর করে নিয়ে খেতে। একাধিক হকারের কাছ থেকে এভাবে খাদ্যদ্রব্য নিয়ে খেলেও কাউকে কোন টাকা দেননি তিনি। এ প্রতিবেদক তাকে টাকা পরিশোধের কথা বললে তিনি নিরুত্তোর থাকেন। হকারও ভয়ে কোন কথা না বলে চলে যান।
পরে একাধিক হকারের সাথে কথা বলে জানা যায়, হকারদের কাছ থেকে এটাওটা জোর করে নেওয়াটা রেলওয়ে পুলিশের পুরনো অভ্যাস। পতিত স্বৈরাচারের আমলে তারা দম্ভের সাথে এ কাজটি করতেন। তবে এখন একটু চুপচাপ থাকলেও ভুল করছেন না জুলুম করতে।
যাত্রীরা জানান, পতিত স্বৈরাচারের আমলে পুলিশ সদস্যরা তিন সিটের একটি বড় সিটে বসতেন। পাশে দুসিট খালি থাকলেও সেখানে কাউকে বসতে দিতেন না। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর পুলিশের চরিত্রের এ অভ্যাসটার পরিবর্তন হয়েছে। তবে পরিবর্তন হয়নি অন্যান্য অভ্যাসের। তারা এখনো গ্রামের কোন সহজসরল যাত্রী ট্রেনে উঠলে লাগেজ চেক করার নামে টাকা আদায় করছেন। দুর্ব্যবহার করছেন তাদের সাথে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে চোরাচালানিদের কাছ থেকে টাকা আদায়েরও অভিযোগ আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন হকার জানান, তিনি আগে ট্রেনে বাদাম বিক্রি করতেন। সে সময় মুটমুট বাদাম পুলিশ সদস্যরা নিজেরাই তুলে নিতেন। এতে তার ক্ষতি হতো। তাই এখন আর বাদাম বিক্রি করেন না।
এ ব্যাপারে খুলনা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন দৈনিক লোকসমাজকে বলেন, এটা খুবই গর্হিত কাজ। এটা কেউ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।