যশোরে জিলা পরিষদের জায়ান্ট স্ক্রিন তৈরি প্রকল্পের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা লুট সাইফুজ্জামান পিকুলের

0

মীর মঈন হোসেন মুসা ॥ যশোর জিলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই লুটে মেতে উঠেছিলেন। বিভিন্ন প্রকল্পের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। দড়াটানা মোড় এবং জিলা পরিষদ মিলনায়তনের সামনে স্থাপিত ২টি। জায়ান্ট স্ক্রিন তার সেই দুর্নীতির প্রমাণ বহন করে চলেছে। জিলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতা সাইফুজ্জামান পিকুল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর দড়াটানা মোড়ের ট্রাফিক বক্সের পেছনে একটি জায়ান্ট স্ক্রিন স্থাপন করেছেন।

২০২১ সালের ২৭ এপ্রিল এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। লুটপাটের সুবিধার্থে পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে জিলা পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জায়ান্ট স্ক্রিনটি তৈরি করে দড়াটানা মোড়ে স্থাপন করা হয়।

কিন্তু ওই জায়ান্ট স্ক্রিনে জিলা পরিষদের কোনো প্রচার প্রচারণা ছিলো না। নিজের ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের দলীয় বিভিন্ন প্রোগ্রামের দেওয়া বক্তব্য ওই জায়ান্ট স্ক্রিনে প্রচার করা হতো। দেখভাল না করার কারণে দড়াটানা মোড়ের জায়ান্ট স্ক্রিনের মূল্যবান যন্ত্রাংশ ইতোমধ্যে চুরি হয়ে গেছে। সেটি এখন অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে। যন্ত্রাংশ চুরির বিষয়টি স্বীকার করেছেন জিলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মো. ওহেদুজ্জামান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পরিষদের একটি সূত্র জানায়, তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুলের ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন এজাজ নামে এক ব্যক্তি। মূলত তিনিই চেয়ারম্যানের হয়ে প্রকল্পের কাজ দেখভাল করতেন এবং দুর্নীতির টাকার ভাগ পেতেন।

জায়ান্ট স্ক্রিন তৈরির সাথে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তি জানান, ওই জায়ান্ট স্ক্রিন তৈরি করতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ কাগজে কলমে ৯ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে বাকি সাড়ে ৪ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন সাইফুজ্জামান পিকুল।

অপর একটি সূত্র জানায়, জিলা পরিষদ মিলনায়তনের সামনে আরও একটি ছোট জায়ান্ট স্ক্রিন স্থাপন করা হয়েছে। জেলা পরিষদের অর্থায়নে তৈরি করা ওই জায়ান্ট স্ক্রিন থেকেও ব্যক্তিগত লাভবান হয়েছেন তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল। প্রকৃত খরচের চেয়ে ১ লাখের বেশি টাকার ভাউচার লিখে দিতে হয়েছিলো সংশ্লিষ্ট কারিগরকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কারিগরও এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, বেশি টাকা না লিখে দিলে তাকে বিল দেওয়া হবে না বলে ভয় দেখানো হয়েছিলো।

কত টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে ছোট এই জায়ান্ট স্ক্রিনে এই তথ্য জানাতে পারেননি জিলা পরিষদের প্রকৌশল শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত প্রশানিক কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলতে পারবেন। যোগাযোগ করা হলে লুৎফর রহমান জানান, তিনি এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এরপর বলা হয় সাঁটলিপিকার মো. আসাদুজ্জামান হয়তো বলতে পারবেন। সাঁটলিপিকার মো আসাদুজ্জামান জানান প্রকৌশল শাখা এ সম্পর্কে অবহিত।