কার্যকর হয়নি ডিম ও মুরগির দাম সবজির কেজিতে বাড়ল ২০ টাকা

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।। সরকার নির্ধারিত দামের থেকে বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খামারের মুরগির ডিম ও ব্রয়লার মুরগি। এ ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর হয়নি। এদিকে এ সপ্তাহে সব ধরনের সবজির কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। ভরা মৌসুমে দাম কমার পরিবর্তে ইলিশ মাছের কেজিতে বেড়েছে আরও ৩০০ টাকা। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অগ্নিমূল্যে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। শুক্রবার সকালে যশোরের বড় বাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতর গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডিমের দাম পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ০১ পয়সা ও খুচরা প্রতিটি ডিমের দাম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছে। আর ব্রয়লার মুরগি খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা ও সোনালি মুরগি ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা।

শুক্রবার বড় বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হতে দেখা যায় ১২ টাকা ৫০ পয়সা দরে। খুচরা ডিম বিক্রেতা গোলাম মোস্তফা বাবলা জানান, তিনি গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রতিটি ডিম পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ৮০ পয়সা দরে কিনেছেন। অথচ সরকার নির্ধারিত পাইকারি মূল্য হচ্ছে ১১ টাকা ০১ পয়সা। প্রতিটি ডিম বাড়তি ৭৯ পয়সা দিয়ে কিনতে হয়েছে তাকে। সেখানে তিনি বিক্রি করছেন ১২ টাকা ৫০ পয়সা।

বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা, সরকার বেঁধে দিয়েছে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা। এখানেও কেজিতে ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। অবশ্য সোনালি মুরগি সরকার নির্ধারণের দাম থেকে কেজিতে ৫ টাকা কমে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাত্র গত সপ্তাহে সোনালি মুরগির কেজি বাজারে বিক্রি হয়েছিল ২৪০ টাকা। সরকার নির্ধারিত সোনালি মুরগির কেজি ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা। খুচরা মুরগি বিক্রেতা ইমরান হোসেন জানান, সম্প্রতি অতি বৃষ্টিতে মুরগির খামারের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে মুরগির দাম বাড়তি।

এদিকে সবজির বাজার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। প্রায় সব ধরনের সবজির কেজিতে এ সপ্তাহে ২০ টাকা করে বেড়েছে। শুক্রবার খুচরা বিক্রেতা নাসির আলী ভালোমানের বেগুন বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকা, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকা। উচ্ছে বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা। বরবটি বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা। কাকরোল বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। করোলা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। ওল বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। শসা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ঢেঁড়স বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ২০ থেকে ৩০ টাকা, লাউ প্রতিটি বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। তিনি আরও জানান, সম্প্রতি কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে চাষিদের সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। বাজারে সবজির আমদানি কমে গেছে।

ভরা মৌসুমে বাজারে ইলিশ মাছের দাম কমার পরিবর্তে আরও বেড়েছে। শুক্রবার বড় বাজার মাছবাজারে নদীর মিষ্টি পানির ১ কেজি ১০০ থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম আকারের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৮শ টাকা, ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম আকারের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৬শ টাকা, ৪ টায় কেজি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬শ টাকা ও ৫ টায় কেজি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৫৫০ টাকা। গত সপ্তাহ থেকে বড় আকারের ইলিশের দাম কেজিতে ৩শ টাকা বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতা এরশাদ আলী জানান, বাজারে মাছের আমদানি খুবই কম, এ কারণে দাম কমার পরিবর্তে আরও বাড়ছে।

বেসরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরিরত ক্রেতা আকবর আলী শুক্রবার বাজারে সবজির আকাশচুম্বি দাম শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, তাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্মূল্যের এই বাজারে টিকে থাকা কষ্টকর। মাছ-মাংসের পরিবর্তে গরিবের আমিষ পূরণের একমাত্র অবলম্বন সেই ডিমও নাগালের বাইরে। তিনি বাধ্য হয়ে তুলনামূলক কম দামে নি¤œমাণের সবজি কিনে বাড়ি ফেরেন।