সরকারি জলাশয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবিতে অভয়নগরে মানববন্ধন

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, অভয়নগর (যশোর)॥ যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাশুয়াড়ী গ্রামের খানজাহান আলী দীঘি নামে পরিচিত জলাশয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। সোমবার সকাল ১১ টায় বাশুয়াড়ী দীঘির পাড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীসহ ৮ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন আলহাজ মকবুল হোসেন সরদার, মুন্সি মনিরুল ইসলাম, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মুন্সি রেজওয়ান, মো রফিকুল সরদারসহ ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো হাবিবুর রহমান, দশম শ্রেণীর ছাত্র মো. মোমিন উদ্দিন প্রমুখ।
অংশগ্রহণকারীরা জানায়, জলাশয় ও দীঘিরপাড় মিলে ২০ শতক জমি। এ জমি খুলনা জেলার ফুলতলা থানার দামোদরের বাসিন্দা মো. সরোয়ার মোল্লা মালিকানা দাবি করে বাশুয়াড়ী খাঁনজাহান আলী (রহ:) দীঘি দখলে রেখেছিলো। ১৯৭১ সালের দিকে সরোয়ার মোল্লা মৃত্যুবরণ করলে তার বড় পুত্র আখতারুজ্জামান পান্না মোল্লা দীঘিটি ভোগ কর ছিলো। ১৯৮৮ সালের মাঠজরিপের সময় বাশুয়াড়ীর এলাকাবাসী জানতে পারে ওই জমি যশোর কালেক্টরেটরের নামে আছে। এটা জানতে পেরে পান্না মোল্লাকে এলাকার মানুষ দীঘি থেকে উচ্ছেদ করে।
এলাকাবাসী দীঘিটি দখল নিয়ে কামাল ফারাজি নামক এক ব্যক্তিকে লিজ দেয়। লিজ থেকে প্রাপ্ত অর্থ এলাকার মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দানসহ উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার হতে থাকে। এর মধ্যে পান্না মোল্লা ৬২ সালের রেকর্ড সংশোধনের জন্য আপিল করেন, ১৯৯৬ সালে সেই আপিলটি খারিজ হয়ে যায়। পরে তিনি জলাশয়কে পুকুর হিসেবে চিহ্নিত করে অবৈধভাবে প্রভাব খাটিয়ে নিজ নামে রেকর্ড করে নেয়। ৯৬ সালে খারিজ হওয়া মামলার বিরুদ্ধে ৯৭ সালে পুনরায় খুলনার কমিশনার ভূমি বরাবর রিভিউ মামলা করেন। বাশুয়াড়ী এলাকাবাসীর পক্ষে কাউকে শুনানি করতে না দিয়ে একতরফা রায় করিয়ে নেয়। এবং পুনরায় দখল করেন। এলাকাবাসী ৯৯ সালে সহকারী জজ অভয়নগর আদালতে রাষ্ট্রের পক্ষে মামলা রুজু করে। মামলাটি বর্তমানে চলমান আছে। ২০০১ সালে এলাকাবাসী পান্না মোল্লাকে পুনরায় উচ্ছেদ করে।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে নোয়াপাড়া পীর বাড়ির সহায়তায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুনরায় দীঘি দখল করে নেয়। তারপর থেকে ২০২৪ এ ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত দীঘির পাড় পান্না মোল্লার নিয়ন্ত্রণে আছে। বহু বছর আগে থেকে দীঘির পূর্বপাড়ে সপ্তাহে তিন দিন হাট বসে । অনুমান ১৯৯০ সাল থেকে হাটের অংশ সরকার ইজারা দিয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এলাকার ছাত্র ও যুবসমাজ দীঘিটা নিয়ন্ত্রণে নেয়। ব্যক্তি মালিকানা বাতিলের দাবিতে এ মানববন্ধন করেছেন তারা।