যশোরে উত্তপ্ত নিত্যপণ্যের বাজার

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।। বাজারে আবারও বেড়েছে সরু চালের দাম। নতুন করে দাম বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের। বেড়েছে খামারের মুরগির দাম। সবজি এখনও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজারে পণ্যের আমদানি কম হওয়ায় দাম কমার সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। তবে ভোক্তারা ব্যবসায়ীদের দাবিকে অজুহাত হিসেবে বর্ণনা করে দাম বাড়ার জন্যে সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন। গতকাল শুক্রবার যশোরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
শুক্রবার বড় বাজার চালবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাংলামতি চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি মানভেদে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকা, গত সপ্তাহে এ চাল বিক্রি হয়েছিল ৮২ থেকে ৮৪ টাকা। মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৬ টাকা, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫৮ থেকে ৬২ টাকা। তাছাড়া শুক্রবার কাজললতা চাল বিক্রি হয়েছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, বিআর-৪৯ চাল বিক্রি হয়েছে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা, বিআর-২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা ও মোটা নূরজাহান চাল বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। চাল বিক্রেতা সাখাওয়াত হোসেন জানান, সম্প্রতি বেশ কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে হাস্কিং মিলগুলোর চাতালে চাল শুকানোর অভাবে বাজারে ঘাটতি দেখা দেয়। এ কারণে চালের দাম বেড়েছে।
এদিকে এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা, গত দুদিন আগে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল প্রতি কেজি ১১০ টাকা। আলুর দাম এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ৬০ টাকা রয়েছে। তবে কাঁচা মরিচের কেজিতে ৬০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। খুচরা বিক্রেতা বাদল রাও জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে যানবাহন রাস্তাঘাটে ঠিকমত না চলায় দূর-দূরান্ত থেকে যশোরে পেঁয়াজ আসতে পারেনি। এ কারণে দাম বেড়েছে।
বড় বাজারের সবজি বিক্রেতা মজনু মিয়া শুক্রবার উচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, করোলা ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, মুখিকচু ৭০ টাকা, শসা ৭০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তিনি জানান বাজারে আমদানি কম হওয়ায় সবজির দাম বেশি।
এ সপ্তাহে খামারের ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও সোনালি ও লেয়ার মুরগির কেজিতে ১০ টাকা করে বেড়েছে। শুক্রবার লেয়ার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৬০ টাকা। আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৩৫০ টাকা। বড় বাজার কাঠেরপুলে গরুর মাংসের দাম এ সপ্তাহে অপরিবর্তিত রয়েছে। বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা। মাংস বিক্রেতা মো. আব্বাস জানান, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজারে ক্রেতাদের সংখ্যা কম। আগের মতো মাংস বিক্রি হচ্ছে না।
শুক্রবার বড় বাজারে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, এতদিন বাজার অস্থিতিশীল ছিল, সিন্ডিকেটরা ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে নিত্যপণ্য বিক্রি করেছেন। বিগত সরকার বেশ কিছু পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও শক্তিশালী সিন্ডিকেট তা কখনও মানেনি। এবার নতুন সরকার এসেছে। গত বৃহস্পতিবার দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। আশা করি তারা এবার সিন্ডিকেট ভেঙে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করবে।