মহেশপুরের বেলেমাঠের ড্রাগনের হাট

0

জিয়াউর রহমান জিয়া, মহেশপুর (ঝিনাইদহ)॥ আফ্রিকা দেশের ফল ড্রাগন এখন ঝিনাইদহের মহেশপুরের মাঠে মাঠে। ফলে মহেশপুরে এখন ড্রাগন আর ড্রাগন। চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ড্রাগনের মাঠে। ড্রাগন ফলের বাজার বসেছে এবার বেলেমাঠ বাজারে। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ড্রাগন চাষিরা বেলেমাঠ বাজারের আড়তে নিয়ে আসছে তাদের ড্রাগন ফল বিক্রি করতে। ড্রাগন ফলের বাজার চলে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। এ বাজারে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি হয় বলে ড্রাগন ফল ব্যবসায়ীরা জানান।
চলতি মৌসুমে মহেশপুর উপজেলায় দুইশ কোটি টাকার ড্রাগন ফল বিক্রির আশা করছেন ড্রাগন চাষিরা।
ড্রাগন চাষিদের ভাষ্য, মহেশপুর উপজেলার প্রতিটি গ্রামের মাঠে মাঠে বাড়ছে ড্রাগনের চাষ। লাভ বেশি হওয়ায় কারণে এলাকার কৃষকরা ড্রাগন চাষে ঝঁকে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছর মহেশপুর উপজেলায় ৩১৬ হেক্টর জমিতে ড্রাগনের চাষ হয়েছে। এ বছরে দুইশ কোটি টাকার ড্রাগন ফল উৎপাদন হবে বলে আসা করা যাচ্ছে।
শখের বসে ২০১৬ সালের দিকে মহেশপুরের আজমপুর এলাকায় কয়েকজন ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। তাদের দেখাদেখি আজ মহেশপুরে শুধু ড্রাগন আর ড্রাগন ফলের চাষ। ড্রাগন চাষে লাভ বেশি হওয়ার কারণেই এলাকার চাষিরা অন্য চাষ বাদ দিনে এখন ড্রাগন চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
ড্রাগন চাষি আক্তার বিশ^াস জানান, ২০১৭ সাল থেকে তিনি ড্রাগন চাষ শুরু করেন। প্রথমে তিনি ১বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান করেন। পরে তিনি ৭ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেন। বাগানের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ফল উৎপাদনও বাড়তে থাকে।
হামিদপুরের কৃষক রাজিব আহাম্মেদ জানান, প্রথমে ১ বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান করতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ব্যয় হয়। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে ফল যদি ভালো হয় প্রথম বছরেই ব্যয়ের টাকা উঠানো সম্ভব হয়।
গৌরীনাথপুর গ্রামের ড্রাগন চাষি মফিজুর রহমান জানান, দুই বছর আগে ড্রাগন চাষ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তার ১৫ বিঘা ড্রাগন ফলের চাষ রয়েছে। এ বছর বৃষ্টি কম ও প্রচন্ড গরমের কারনে ফল কম এসেছে।
এখন মহেশপুরের গৌরীনাথপুর, আজমপুর, বিদ্যাধরপুর, মালাধরপুর, বলিভদ্রপুর,রামচন্দ্রপুর,কাশিপুর,নওদাগ্রাম,বেলেমাঠ, বাথানগাছি, শংকরহুদা, কালুহুদা, জুকা গ্রামজুড়ে শুধুই ড্রাগর ফলের বাগান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা জানান, চলতি বছরে মহেশপুরে ৩১৬ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হয়েছে। ফলন ভালো হলে প্রায় ২শ কোটি টাকার ড্রাগন ফল এবার বিক্রি করবেন ড্রাগন চাষিরা।