ঘূর্ণিঝড় রিমালের তা-বে বাগেরহাটের উপকূল ক্ষতিগ্রস্ত : ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা ॥ ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বাগেরহাটের উপকূলের ৫ উপজেলা। জেলার ৪০০ কিলোমিটার রাস্তা ও কাঠের পোল, কালভার্ট, সেতুসহ ১২০টি স্থাপনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার ঘূর্ণিঝড় রিমালে ৬৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি নিরুপণ করেছে জেলা প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। দ্রুত সংস্কারের দাবি উপকূল বাসীর।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথাও কোথাও ইট সোলিংয়ের একাধিক স্থানে ভেঙে সমতল জমির সাথে মিশে গেছে। আবার কোথাও গ্রামীণ সড়কের অস্তিত্ব দেখা মিলছে না। জলোচ্ছ্বাসে এভাবে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া সেতু. কাঠের পোল, কালভার্টসহ শতাধিক স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্য। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে স্কুলগামী শিক্ষর্থীরা। বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও বাগেরহাট সদরের যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে এলাকাবাসী। স্থানীয় ব্যবস্থায় সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছে অনেকে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামো দ্রুত সংস্কারের দাবি উপকূল বাসীর।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ বলেন,‘ঝড়ের কারণে জলোচ্ছ্বাসে আমাদের এলাকার সব রাস্তাঘাট ন্ষ্ট হয়ে গেছে, চলাচল করতে পারছি না। কাঠেরপোলগুলো ভেঙে গেছে। এছাড়া সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে । আমাদের রাস্তাঘাট মেরামত না করলে কোথাও যেতে পারবো না’।
মিমি নামের এক শিক্ষার্থী বলে,‘ রাস্তাগুলো নষ্ট হয়েছে। এছাড়া স্কুলে যাওয়ার জন্য পোলটা অর্ধেক ভেঙে অন্যত্রে নিয়ে গেছে। আমরা স্কুলে যেতে পারছি না। দ্রুত পোলটি মেরামত না করলে স্কুলে যাওয়া সম্ভব না,।
মোরেলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মনিরুল হক তালুকদার বলেন, এবারের ঝড়ে এত ক্ষতি কোনদিন হয়নি। জলোচ্ছ্বাসে এলজিইডির কার্পেটিং ও ইট সোলিংয়ের রাস্তাঘাট একাধিক স্থানে ভেঙে সমতল জমির সাথে মিশে গেছে। গ্রামের রাস্তাঘাটে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লোকালয়ের লবণাক্ত পানি ঢুকে সুপেয় পানির উৎসগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পুকুর, ডোবা ও খাল বিলের পানি কালছে আকার ধারণ করায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। রান্না, গোসল করাসহ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবাহিত ডায়রিয়া ও চর্ম রোগসহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে উপকূলবাসী।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাস্তাঘাটসহ নানা অবকাঠমোর ক্ষতি নিরুপণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বাগেরহাট জেলার ৪০০ কিলোমিটার রাস্তা ও কাঠের পোল, কালভার্ট, সেতুসহ ১২০টি স্থাপনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও কাঠের পোল, কালভার্ট, সেতুসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় এবার ঘূর্ণিঝড় রিমালে ৬৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে ক্ষতিপূরণ পাঠানো হয়েছে। ঝড়ের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসনের শীর্ষ এই কর্মকর্তা।