ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে নিজ সংগঠনের নারী কর্মীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে একই দলের এক নারী কর্মীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগ উঠেছে। বিয়ের কথা বলতেই ওই কর্মীকে নিজ দলের লোকজন দিয়ে খুন- জখমের হুমকি দিচ্ছেন জেলা ছাত্রলীগের ওই প্রভাবশালী নেতা। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ কর্মীর। তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ কর্মী যশোর সরকারি এম এম কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে সাতক্ষীরা ল কলেজের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে শাস্তি দাবি করে সংগঠনের যশোর জেলা এবং কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লিখিত আকারে জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
ওই শিক্ষার্থী বলেন, দুই থেকে আড়াই বছর আগে তরিকুল ইসলামের সাথে আমার পরিচয় হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে। সেখান থেকে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে আমাদের মধ্যে শখ্য গড়ে ওঠে। এরপর সে প্রথমে ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে তার ভাড়া বাড়িতে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে তরিকুল ইসলাম বাসা পরিবতর্ন করে শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডে বাসা নেয়। ওই বাড়ির মালিক জানেন আমি তরিকুল ইসলামের বিবাহিত স্ত্রী। ওই বাড়িতে দিনের পর দিন সে আমাকে হরহামেশা নিয়ে যায়। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে ওই বাড়িতে রেখে তরিকুল ইসলাম আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। এক পর্যায়ে আমি তাকে বিয়ের কথা বলি। কিন্তু সে ছলচাতুরির আশ্রয় নেয়। এখন সে আমাকে বলছে, প্রেম থাকলে অনেক কিছু হয়। সে ( তরিকুল) আমাকে অস্বীকার করবে কেন? আমাকে ওর বিয়ে করা লাগবে। পরে জানতে পারি ঝিকরগাছার দিকদানা গ্রামে অপর একটি মেয়ের সাথে তার বিয়ের কথা চলছে। আমি তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
এই প্রতিবেদক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন করিব পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের প্রতিক্রিয়া জানার জন্যে তাদের মোবাইল ফোনে গেল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত একাধিকবার কল দিলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি। একই সময়ে অভিযুক্ত জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলামকে একাধিকবার কল দিলেও তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।
পরে এই প্রতিবেদক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, যশোর থেকে এই জাতীয় কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত আমার দপ্তরে পৌঁছায়নি। তবে এই জাতীয় অভিযোগ যদি আমাদের কাছে আসে তবে বিষয়টা আমরা অবশ্যই খতিয়ে দেখবো। আমরা সব সময় নারী অধিকার নিয়ে কথা বলি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যে কোনো মেয়ের নিরাপত্তা দিতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। মেয়েদের যে কোনো বিপদে -আপদে এবং দেশের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের দায়িত্ব। আমরা অবশ্যই বিষয়টি যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব। তবে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ কর্মী দাবি করেন, তিনি বিষয়টি লিখিত আকারে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছেন।