লেবুতলার চেয়ারম্যান মিলনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা যশোরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে নির্বাচন না করার হুমকির অভিযোগে ৫ জন আটক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মোবাইল ফোনে যশোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দোয়াত-কলম প্রতীকের পক্ষে ভোট না করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ৫ জন আটক হয়েছেন। সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার লেবুতলা ঘোষপাড়ায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে ডিবি পুলিশ। হুমকি সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপ ও মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে তাদের আটক করা হয়।  মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক-সার্কেল জুয়েল ইমরান।
ব্রিফিংয়ে পুলিশের শীর্ষ ওই কর্মকর্তা জানান, গত ১ জুন রাত ১১টার দিকে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি ডিবি পুলিশ পরিচয়ে লেবুতলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার খাইরুল ইসলামকে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ভোট না করার হুমকি দেন। এ সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপসহ অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে অভিযোগ করেন দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বিপুল। বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আব্দুর রশিদ তদন্তপূর্বক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে পুলিশকে অনুরোধ জানান। এর প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্তসহ ৫ জনকে আটক করে। এ সময় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে হুমকি দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই ঘটনার সাথে খাইরুল ইসলাম মেম্বারও জড়িত। তারা পরস্পর যোগসাজসে ডিবি পুলিশ সেজে একে অন্যের কাছে মোবাইল ফোন করে অডিও ক্লিপ তৈরি করেছিলেন। আটক ৫ জনের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি আরও জানান, আটকরা মূলত প্রতারক। তারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ডিবি পুলিশকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পরস্পর যোগসাজসে এই নাটক সাজিয়েছেন। জড়িত প্রতারকরা আটক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।
আটকরা হলেন- লেবুতলা ঘোষপাড়ার অশোক কুমার ঘোষের ছেলে মিঠুন কুমার ঘোষ (২২) ও অসিম ঘোষ (২৫), সুনীল ঘোষের ছেলে বিশ্বজিৎ ঘোষ, লেবুতলা গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে জসিম উদ্দিন (৩২) ও ফুলবাড়ি গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে মুহিন হোসেন (২৬)।
ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, ডিবি পুলিশকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রের সাথে লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলীমুজ্জামান মিলন জড়িত। আটকরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশকে জানিয়েছেন, তারা চেয়ারম্যান আলীমুজ্জামান মিলনের লোক। আলীমুজ্জামান মিলনের নির্দেশে খাইরুল ইসলাম মেম্বারসহ তারাসহ আরও কয়েকজন পরস্পর ষড়যন্ত্র করেন। এরপর তারা হুমকির ওই নাটক সাজান।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় সদর উপজেলার ফুলবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই পবিত্র বিশ্বাস লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলীমুজ্জামান মিলনকে এজাহার গর্ভের আসামি এবং আটক ৫ জনসহ ৭ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করে কোতয়ালি থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। এজাহারভুক্ত পলাতক অপর দুই আসামি হলেন, সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের মোকছেদ আলী মোল্লার ছেলে খাইরুল ইসলাম মেম্বার ও বীর নারায়ণপুর গ্রামের পরিতোষ কুমার ঘোষের ছেলে উজ্জল কুমার ঘোষ।
মামলায় এসআই পবিত্র বিশ্বাস উল্লেখ করেছেন, আটক আসামিদের জবানবন্দি ও উদ্ধারকৃত আলামতদৃষ্টে প্রতীয়মান হয়ে যে, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডিবি পুলিশকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে লেবুতলার চেয়ারম্যান আলীমুজ্জামান মিলনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যে উল্লিখিত আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হুমকির ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করেন।
এদিকে আটক ৫ আসামিকে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আটকরা এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যরা মূলত একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোক। তারা ডিবি পুলিশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে সাধারণ ভোটারদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং ভোট সুবিধা পেতে পরিকল্পিতভাবে এই কাজটি করেছেন। কিন্তু এ ঘটনার জড়িত ৫ জনকে আটক করার পর সেই ভোট সুবিধা পাওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।