রামপালে রিমালের তান্ডবে হাজারো ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত ভেসে গেছে মাছের ঘের,আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি খাবার

0

 

এম, এ সবুর রানা, রামপাল (বাগেরহাট) ॥ রামপালে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাত্র ৫ টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
জানা গেছে, রামপালে প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস। এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দী হয়ে রয়েছে। রোববার (২৬ মে) রাতভর ও সোমবার (২৭ মে) সারাদিন বৃষ্টি ও ঝেড়ো হাওয়ায় কাঁচা-আধাঁপাকা ১ হাজার ২০০ বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকরী খাত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছের শতভাগ ঘের তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। রোববার রাত থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গাছপালা ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গবাদি পশুর আশ্রয় কেন্দ্র, মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষের বাড়ি ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাত্র ৫ টন চাল সহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেটি সব জায়গাতে বণ্টন করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে ত্রাণ সহায়তা পৌছানো যাচ্ছে না। এতে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষগুলোর দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্মকর্তা মতিউর রহমান জানান, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে মোট ১৬৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাতে ৮ হাজার ৮০০ দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তার মধ্যে নারী, শিশু ও প্রতিব›দ্ধীরা রয়েছেন। তাদের জন্য চিড়া, গুড়, দিয়াশলাই, মোমবাতিসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হয়েছে। প্রতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের খিচুড়ি রান্না করে দুর্গতদের দিতে বলা হয়েছে। দুর্যোগ না কমা পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানের জন্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ১১ টি মেডিকাল টিম গঠন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক কাজ করছে। প্রতি ঘণ্টায় ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কার্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা জানিয়েছেন, দুর্যোগের ক্ষতি কমাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। মানুষের প্রধান আয়ের উৎস মাছের ঘের তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, গাছপালা উপড়ে পড়েছে । বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে। আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষের খাবার সরবরাহ ঠিক রাখতে কাজ করছি। কোথাও কোনো খারাপ খবর পাওয়া গেলে সাথে সাথে জানালে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। এ জন্যে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।