ঝিনাইদহ সীমান্ত দিয়ে পাচার হওয়া সোনার মালিকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ ॥ ঝিনাইদহসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত পথে ভারতে সোনা পাচার বেড়েছে। পাচার হচ্ছে কেজি কেজি সোনা। এপারের বিজিবি এবং ওপারের বিএসএফের হাতে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সোনা আটক হচ্ছে। কিন্ত বরাবরের মতো সোনার প্রকৃত মালিকরা থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। পাচারকৃত এই সোনার প্রকৃত মালিক আসলে কে তা বছরের পর বছর রহস্যাবৃত্তই থেকে যাচ্ছে।
সোনা চোরাচালান নিয়ে মহেশপুরে খুন ও একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার বদলির ঘটনাও ঘটেছে। সোনার চালান ধরিয়ে দেওয়ার দ্বন্দ্ব নিয়ে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গা গ্রামে গুলি করে শামিম হোসেন ও তার ভাতিজা মন্টুকে হত্যা করা হয়। তরিকুল ইসলাম আকালে নামে এক ব্যক্তির ৪ কেজি ৬৬৫ গ্রাম ওজনের সোনা ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে চাচা ভাতিজাকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। এ ঘটনার পর থেকে তরিকুল ইসলাম আকালে ভারতে পালিয়ে গেছেন। ঘটনার দিন সকালে মহেশপুরের ৫৮ বিজিবি মাটিলা সীমান্ত থেকে ওই সোনার চালান জব্দ করার পর বিকেলে জোড়া হত্যার ঘটনা ঘটে। তবে বিজিবির হাতে ধরা পড়া ওই সোনা আসলে কি তরিকুলের নাকি পর্দার আড়ালে থাকা গডফাদারের তা পুলিশি তদন্তে এখনো উঠে আসেনি।
২০২৪ সালে মহেশপুর থানার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে সোনা পাচারের ঘটনা ঘটেছে ৬টি। এ বছরের ১৭ জানুয়ারি মাটিলা সীমান্ত থেকে ৪ কোজি ৬৬৫ গ্রাম ওজনের সোনার বার উদ্ধার করে বিজিবি। এছাড়া ২ মার্চ একই সীমান্ত থেকে চার কোটি ৩৫ লাখ টাকার মালিকবিহীন ৫টি সোনার বার উদ্ধার করে। ১৬ এপ্রিল মহেশপুরের ছয়ঘরিয়া থেকে ৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা মূল্যের চার কেজি ৬৩ গ্রাম ওজেনের সোনার বার উদ্ধার ও দুই বহনকারী জসিম ও আব্দুল মান্নানকে আটক করে। গত ২৯ এপ্রিল মহেশপুরের নগরবন্নি থেকে ৩ কেজি ৫৫৮ গ্রাম ওজনের তিনটি সোনার বারসহ দুইজনকে আটক করা হয়।
মহেশপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান কাজল জানান, এ বছর মহেশপুর থানায় সোনা চোরাচালানের ৬টি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো সবই চলমান ও তদন্তনাধীন। তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত উচু শ্রেণির কাউকে তদন্তে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, বিজিবি যাদের আটক করে দেয়, তারা মূলত বহনকারী। সোনার হাত বদলিয়ে সীমান্তে আসতে আসতে নেপথ্যের কারিগরদের নাম বহনকারীরা বলতে পারে না। তাই বরাবরের মতো সোনার মালিকরা থেকে যায় পুলিশি নাগালের বাইরে।