অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ৫১ নেতা-কর্মী কারামুক্ত

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুলিশের দায়েরকৃত কথিত নাশকতা মামলায় আইনি লড়াইয়ে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুসহ ৫১ নেতা-কর্মী। জামিনে মুক্তি পেয়েই দলীয় নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন নেতৃবৃন্দ।
উচ্চ আদালতে জামিনে থাকা নেতা-কর্মীদের  বৃহস্পতিবার যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে বিচারক শেখ নাজমুল আলম নেতা-কর্মীদের জামিন মঞ্জুর করেন। পরে জামিনের কাগজপত্র যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের পাঠানো হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেল ছয়টার দিকে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ নেতৃবৃন্দ মুক্তি লাভ করেন।
মুক্তি পাওয়া অন্যান্য নেতাকর্মীরা হলেন, জেলা বিএনপির সদস্য মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি প্রমুখ।
এদিকে প্রিয় নেতৃবৃন্দের জামিনের সংবাদ পেয়েই বেলা তিনটার দিক থেকে দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মী যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকের বাইরে অপেক্ষা করেন। যশোরের আটটি উপজেলা ও পৌরসহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকেও দলীয় নেতা-কর্মীরা ছুটে আসেন। সেখানে উল্লেখযোগ্য নেতা-কর্মীর মধ্যে ছিলেন যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য গোলাম রেজা দুলু, মো. মুছা, মিজানুর রহমান খান, একে শরফুদ্দৌলা ছোটলু, সিরাজুল ইসলাম, নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মদ প্রমুখ।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ নেতৃবৃন্দের মুক্তি পর দলীয় নেতাকর্মীরা কারাগারের প্রধান ফটকের বাইরে স্লোগান দিতে থাকেন। সেখান থেকে মিছিল সহকারে নেতৃবৃন্দ অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের বাসভবনে যান। সেখানে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত উপস্থিত হাজার হাজার নেতাকর্মীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমাদেরকে বারবার মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করে জনগণের মুক্তির জন্যে দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে রাজপথের চলমান আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। আমাদের অসংখ্য সহযোদ্ধা খুন, গুমের শিকার এবং পঙ্গত্ব বরণ করেছেন। দলের ৫০ লাখ নেতাকর্মী মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে কারাবরণ করেছেন। কিন্তু আমাদের আন্দোলন স্তব্ধ হয়নি।
তিনি বলেন, কারাগারে নতুন করেন শপথ নিয়েছি আগামী দিনের রাজপথের আন্দোলন চূড়ান্ত লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত রাজপথ ছেড়ে যাব না ইনশাআল্লাহ।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তাদের এই কারামুক্তির প্রক্রিয়া তদারকির জন্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেইসাথে কারাগারে থাকা অবস্থায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের নেতৃত্বাধীন সিনিয়র নেতৃবৃন্দ খোঁজ- খবর নেওয়া এবং আইনী প্রক্রিয়া তদারকি এবং একই সাথে যেসব আইনজীবী তাদের পক্ষে আইনী লড়াই করেছেন, তাদের প্রতিও ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বক্তব্য রাখেন।
দলীয় নেতাকর্মীদের জামিন শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী দেবাশীষ দাস, মো.ইসহক, আমিনুর রহমান, এম এ গফুর, নুরুজ্জামান খান, মোস্তফা কামাল মিন্টু, সুদিপ্ত কুমার ঘোষ প্রমুখ।
দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকে রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ কর্মসূচি পুলিশি তান্ডবে পন্ড হয়ে যাওয়ার পর থেকে দলটি শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করে। দেশব্যাপী সেই আন্দোলন তুঙ্গে থাকা অবস্থায় সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন এক তরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। সেই এক তরফা প্রহসনের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে দলটি দেশব্যাপী তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখে। সেই কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ দলীয় নেতা-কর্মীদের নামে মামলা করে। তারপরও দলীয় নেতাকর্মীরা আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে পুলিশের দায়েরকৃত কথিত নাশকতা মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। এরপর গেল ৩১ মার্চ তারা নিম্নআদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিন আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।