রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডাকাতির ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১২

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা॥ বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডাকাতির সময় নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আনসার ব্যাটালিয়ন হাবিলদার মো. শহিদুল ইসলাম এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় এজাহার নামীয় ১২ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১১ জনকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বাগেরহাট আমলী আদালত-২ এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল আজাদ আসামিদের কারাগারে সোপর্দের আদেশ দেন। এছাড়া ঘটনার দিন গুলিবিদ্ধ আছাবুর গাজী নামের এক আসামি পুলিশ হেফাজতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গ্রেফতাররা হলেন, মানিক শেখ (৩৫), ফজলু গাজী(৫৫), সালাম শেখ (৩০),মনি গাজী( ৪০), নূর নবী শেখ (১৯), আসাদ মোল্লা(৩৩), মো. আব্দুল্লাহ (৩৩),মো. বায়জিদ (৩৭), রুবেল শেখ (২৬), মানজুর গাজী (২৮) ও আছাবুর গাজী( ২৯)। এদের সবার বাড়ি রামপাল উপজেলায়। মামলা দায়েরের আগেই সন্দেহভাজন হিসেবে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব আসামিকে আটক করে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, বুধবার রাত সোয়া দশটার দিকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ম্যাটারিয়াল ইয়ার্ডের তিন নাম্বার টাওয়ারের সীমানা প্রাচীর কেটে ৫০-৬০ জন সশস্ত্র ডাকাত দলকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখে নিরাপত্তাকর্মীরা চিৎকার দেন। এ সময় অস্ত্রধারীরা নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর হামলা করে। এক পর্যায়ে আনসার সদস্যরা এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা হয়। এতে নিরাপত্তা সুপারভাইজার আকরাম, প্রহরী শেখ সাইদুল ইসলাম, মিন্টু বৈরাগী, ব্রজেন মন্ডল ও আনসার ব্যাটালিয়ন হাবিলদার কামাল পাশা গুরুতর আহত হন। জীবন বাঁচাতে ও সরকারি সম্পদ রক্ষায় কামাল পাশা তার নিজ নামে ইস্যুকৃত আগ্নেয়াস্ত্র এসএমজি দিয়ে ৩০ রাউন্ড গুলি ছোড়েন। তখন অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়। এই সময়ে সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা ১ হাজার ৫শ কেজি লোহা নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ৯০ হাজার টাকা।
আহতদের মধ্যে কামাল পাশা ও মিন্টু বৈরাগী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্য তিনজন রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৌমেন দাস বলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডাকাতি, হামলা ও মালামাল লুটের ঘটনায় একজন আনসার সদস্য মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এজাহার নামীয় ১১জন আসামিকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।গ্রেফতার আরও এক আসামি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ।
ম্যাটারিয়াল ইয়ার্ডটি মূলত রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল অবকাঠামোর বাইরে। কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা এই ইয়ার্ডে লোহার রড, তামার তার, তামার তারের বাক্স, লোহার এ্যাঙ্গেল, স্টিলের পাত, লোহার পাতসহ ব্যবহারযোগ্য ও ব্যবহার অযোগ্য বিভিন্ন মূল্যবান ধাতু রাখা হয়। এসব ধাতু লুট করতেই সংঘবদ্ধ চক্রটি ম্যাটারিয়াল ইয়ার্ডে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।