যশোরে ফের খুন, এবার লাশ হলেন রিকশাচালক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে এবার ছিনতাইকারীদের হাতে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন বাদশা মোল্লা (৫৭) নামে একজন রিকশাচালক। ‍মঙ্গলবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়ায় মাগুরা সড়কের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই দিন আগে তিনি রিকশা চালাতে বাড়ি হতে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজের কয়েক ঘন্টা পর খড়কি গাজীর বাজার সংলগ্ন রেল লাইনের পাশ থেকে ব্যাটারিবিহীন তার রিকশাটি উদ্ধার করে পুলিশ।
যশোরে একের পর এক মানুষ নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হচ্ছেন। চলতি বছরে এ নিয়ে ১১ জন হত্যার শিকার হলেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে যখন সাধারণ মানুষ চরম উদ্বিগ্ন ঠিক তখনই ছিনতাইকারীদের হাতে রিকশাচালক বাদশা মোল্লা হত্যার ঘটনায় সর্বত্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
নিহত বাদশা মোল্লা যশোর শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়ার ফজলু মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া।
নিহতের ছেলে রাসেল মোল্লা জানান, তার পিতা বাদশা মোল্লা রিকশা চালানের উদ্দেশ্যে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রোববার রাত ৮টার দিকে শংকরপুর চোপদারপাড়ার বাসা থেকে বের হন। এরপর তিনি রাতে বাড়ি ফিরে না আসায় তারা চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন সকালে জানতে পারেন, তার পিতার রিকশাটি খড়কি গাজীর বাজার সংলগ্ন রেল লাইনের পাশ থেকে রোববার রাত ২টার দিকে পুলিশ পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। রিকশায় ব্যাটারি ছিলোনা। রিকশাটি পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা ছিলো। এ খবর পেয়ে পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে উদ্ধার হওয়া রিকশাটি তার পিতার বলে শনাক্ত করেন। একইদিন তার খালাতো চাচা আলমগীর নিখোঁজের ঘটনায় যশোর কোতয়ালি থানায় একটি জিডি করেন। নিহতের ছেলে বলেন, আজ (মঙ্গলবার) সকালে জানতে পারি, পাঁচবাড়িয়ায় মাগুরা সড়কের পাশের ঝোপের ভেতরে একটি লাশ পাওয়া গেছে। এ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে লাশটি তার পিতা বাদশা মোল্লার বলে শনাক্ত করেন।
কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী জানান, পাঁচবাড়িয়ায় বাফার সার গোডাউন সংলগ্ন জনৈক মাহাবুব আলমের এম আর ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে সড়কের পাশের একটি গর্তের ভেতর লাশটি ছিলো। লতাপাতা দিয়ে লাশ ঢেকে রেখেছিলো খুনিরা। নিহতের মুখমন্ডলের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
এম আর ইন্টারন্যাশনালের মালিক মো. মাহাবুব আলম জানান, সকালে এক ব্যক্তি ঘাস কাটতে এসে লাশটি দেখতে পায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন জানান, এই হত্যাকান্ডটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। পুলিশ জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ছাড়াও ডিবি পুলিশ, পিবিআই কর্মকর্তা ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া পুলিশ সেখানকার একটি প্রতিষ্ঠানে থাকা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ নিয়ে গেছে।
ডিবি পুলিশের এসআই মো. মফিজুল ইসলাম জানান, তারা ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখছেন।