চৌগাছায় শুরু হল তিন দিনের গুড় মেলা

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় ঐতিহ্যবাহী গুড় মেলা জমে উঠেছে। তিন দিনব্যাপী মেলার প্রথম দিনেই গাছি, দর্শনার্থী আর ক্রেতা সাধারণের সরব উপস্থিতিতে এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। সোমবার দুপুরে ঐতিহ্যবাহী এই মেলার উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক বলেন, ‘গুড় মেলা সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না। গুড়ের মেলায় এসে আমি অভিভূত। এখন আমি জানলাম গুড় মেলার যথেষ্ঠ গুরুত্ব রয়েছে। আমি মনে করি মেলা থেকে খেজুর গাছ সংরক্ষণের একটি বার্তা সকলের মধ্যে পৌঁছে যাবে। মেলা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা পরিবেশকে সুন্দর রাখার চেষ্টা করব, সংরক্ষণ করব খেঁজুর গাছকে।’
তিনি আরও বলেন, গুড় উৎপাদনের সাথে যারা যুক্ত সেই গাছিদের সব সময় সহযোগিতা করা হবে। তাই আমাদের পরিবেশবান্ধব খেজুর গাছ বেশি করে রোপণ করা একান্ত দরকার।
জেলা প্রশাসক বলেন, গুড় মেলাটি চৌগাছা থেকে শুরু হয়েছে। মেলা থেকে গাছিরা যেমন উপকৃত হবেন তেমনি ক্রেতাসাধারণ ভেজালমুক্ত গুড় ক্রয় করতে পারবেন। তাই প্রতিবছর মেলার কার্যক্রম অব্যহত রাখতে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. এম মোস্তানিছুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কলামিস্ট মিজানুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি মাসুদ চৌধুরী, পৌর মেয়র নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিকুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হোসেন, গবেষক নকিব মাহমুদ প্রমুখ ।
মেলায় গুড় নিয়ে আসা উপজেলার হয়াতপুর গ্রামের গাছি শান্তি মোল্লা, নিয়ামতপুর গ্রামের চান্দালি বিশ্বাস, পুড়াহুদা গ্রামের বাবলুর রহমান, হয়াতপুর গ্রামের মো. আব্দুল, মাঠচাকলা গ্রামের আব্দুল কুদ্দস, দেবীপুর গ্রামের মুক্তার হোসেন, দুলালপুর গ্রামের সাইফুল হোসেন, বাঘারদাড়ি গ্রামের লিয়াকত আলী বলেন, গুড় মেলা নিঃসন্দেহে গাছিদের আরও উৎসাহ যোগাবে। মেলা হওয়ার খবরে বেশ আগে ভাগেই আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং আজ উদ্বোধনী দিনে গুড় নিয়ে হাজির হয়েছি। খুশির খবর হচ্ছে মেলাতে সন্তোষজনক গুড় বেচাকেনা হয়েছে। সামনের দুই দিনে এই কেনাবেচা অব্যহত থাকলে গাছিরা বেশ লাভবান হবেন। তবে গাছিরা আশংকা প্রকাশ করে বলেন, শুধু মেলা আয়োজন করলেই হবে না। খেজুর গাছ রক্ষায় প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতি বছরই নির্বিচারে খেজুর গাছ মারা হচ্ছে, বিশেষ করে উপজেলার ইটভাটাতে দেদারছে পোড়ানো হচ্ছে খেজুর গাছ। ভাটাতে অভিযান চালিয়ে খেজুর গাছ পেলেই তাদের আইনের আওতায় আনলে গাছ নিধন বন্ধ হবে। পাশাপাশি বেশি করে খেজুর গাছ রোপণ ও সংরক্ষণ করতে হবে বলে গাছিরা মতামত প্রকাশ করেন।
সভা শেষে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার গুড় মেলার স্টল পরিদর্শন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মেলার বৈশাখী মঞ্চে মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।