মৃদু শৈত্য প্রবাহ : যশোরে আজ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ছুটি

0

 

আকরামুজ্জামান ॥ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট মৃদু শৈত্যপ্রবাহে আজ মঙ্গলবার যশোরের সকল মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে আগামীকাল কী হবে। গতকাল রাতে প্রথমে জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে একই সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ।
দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে নামলে স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলো শিক্ষা বিভাগ। তবে গতকাল সোমবার যশোরে তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হলেও এদিন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। হাড়কাঁপানো শীত উপেক্ষা করেই এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন শিফটের ক্লাসে অংশ নিতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায় গতকাল সোমবার যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি শীত মৌসুমে এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এদিন বাতাসে আদ্রতা ছিলো ৯৫ শতাংশ। আগামী দুই দিন আবহাওয়ার এ পরিস্থিতি বিরাজ করবে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে তাপমাত্রার পারদ যখন এ অঞ্চলে ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসে তখনও জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই খোলা ছিল। অনেক অভিভাবক এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা সে বিষয়ে সংবাদকর্মীদের কাছে ফোন দিয়ে জানতে চান। তবে এ বিষয়ে শিক্ষা অফিস থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় অন্যান্য দিনের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম যথারীতি চলে।
যশোর জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা ফাতেমা বেগম বলেন, সকালে তীব্র শীত উপেক্ষা করে তার দুই সন্তানকে নিয়ে স্কুলে নিয়ে আসেন। সেখানে এসে জানতে পারেন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে অনেক অভিভাবক স্কুল বন্ধ থাকবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করলেও কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
একই কথা বলেন, যশোর শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা শামসুন্নাহার। তিনি বলেন, অনেক শিক্ষার্থীই তাপমাত্রা কম থাকার কারণে প্রতিষ্ঠানে আসেনি। অথচ এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মো. আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার আমার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছেন, তিনি শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন। এর পরপরই জেলা শিক্ষা অফিসার মাহফুজুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, যেহেতু তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে এসেছে এবং আগামী দুই দিন আবহাওয়া পরিস্থিতি একই অবস্থা বিরাজ করবে বলে আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। সেকারণে মঙ্গলবার জেলার সকল মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি বিবেচনায় যেকোনো সময়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে বলে এ শিক্ষা কর্মকর্তা জানান। এর ঘণ্টাধিকাল পর জানা যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও বন্ধ থাকবে আজ।
রাত ৮টার দিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোফাজ্জেল হোসেন খান বলেছিলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে যে পরিপত্র জারি করা হয়েছে সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে উল্লেখ করা রয়েছে, কোথাও সর্বনি¤œ তাপমাত্রার কথা বলা হয়নি।
পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জানা যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ থাকছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হান্নান।
এদিকে সারা দেশে চলমান শৈত্যপ্রবাহের কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সকাল ১০টায় ক্লাস শুরু হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
গতকাল সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠদান কর্মসূচি পরিবর্তন করে অফিস আদেশ জারি করে।
এতে বলা হয়, সারা দেশে চলমান শৈত্যপ্রবাহের কারণে শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে। এ ছাড়া ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা হলে ইতোপূর্বে জারি করা নির্দেশনা যথারীতি বহাল থাকবে।