হাড় কাঁপানো শীতে অরুনের কষ্টের জীবন

0

 

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ মাঘের হাড় কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশার মধ্যে ঠিকানাহীন শারীরিক প্রতিবন্ধী অরুনের ঠিকানা হয়েছে সড়কের পাশে পলিথিনে মোড়ানো ঝুপড়ি ঘরে। নেই শীতের তেমন পোষাক, লেপ তোশকের অভাব তো আছেই। এই পরিস্থিতিতে দারুন কষ্টে পার হচ্ছে তার দিন আর রাত।
চৌগাছা বাজারে বছরের পর বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করেন মো. অরুন। তার বাড়ি মহেশপুর উপজেলাতে হলেও তিনি থাকেন চৌগাছা বাজারে। একটি দুর্ঘটনায় তার কোমরের হাড় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। চিকিৎসার অভাবে দুটি পা ধীরে ধীরে অকেজো হয়ে পড়ে। তিন- চার বছর ধরে তিনি হেঁটে চলাফেরা করতে পারেন না। সড়কে হেচড়ে হেচড়ে সারাদিন এ দোকান ও দোকান হতে যা রোজগার হয় রাতে পলেথিনের ঝুপড়ি ঘরে ফিরে নিজে রান্না করে তা খেয়ে রাত যাপন করেন। গত কয়েক দিনের একটানা শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন অরুন। একদিকে নিচে মাটির ঠান্ডা অন্যদিকে পলিথিনের ওপর থেকেও ঠান্ডা আসে -সব মিলিয়ে তিনি দারুন কষ্টে আছেন।
গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, চৌগাছা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদের সেতুর পশ্চিম পাশে সড়কের ধারে পলিথিন টানিয়ে তার নিচে ছোট্ট শিশুদের মত কুচড়ি মুচড়ি হয়ে শুয়ে আছেন। এ সময় কথা হয় অরুনের সাথে। তিনি বলেন, এক দশক আগে পারিবারিক নানা কারণে মায়ের হাত ধরে মহেশপুর হতে চৌগাছায় চলে আসেন। মা ও সন্তান অরুন বাজারে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আকস্মিকভাবে মায়ের মৃত্যু হলে অরুন বড়ই একা হয়ে যান। ৫/৬ বছর আগে তিনি মহেশপুরের নিজ গ্রামে যান। ডাব পাড়তে নারিকেল গাছে ওঠেন। গাছ থেকে পড়ে গিয়ে তার মাজার হাড়ে আঘাত লাগে। চিকিৎসা অভাবে তা ভাল হয়নি। বরং দুই পা অচল হয়ে গেছে। অবিরাম প্রসাব হয় পোষাকে। এই অবস্থায় মাটি দিয়ে হেচড়ে হেচড়ে তিনি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী চঞ্চল কবির, কৃষ্ণ সরদার, আব্দুল আলিম বলেন, অরুন অনেক দিন থেকেই চৌগাছাতে থাকেন। বর্তমানে শারীরিক অক্ষমতার কারণে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারেন না। তার মাথা গোঁজার জায়গাটুকু নেই। আমরা যখন যেমন পারি ওকে সেভাবে সহযোগিতা করি।