চালের বাজারে অস্থিরতা, রোজার দুই মাস আগেই বাড়ল ছোলা ও ডালের দাম

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন  যশোরে চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের কেজিতে দাম বেড়েছে ২টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন হাট-বাজারে ধানের সরবরাহ কমে গেছে, বেশিরভাগ ধান মজুদদাররা কিনে নিয়েছেন । এ কারণে বাজারে চালের যোগানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এদিকে রমজানের দুই মাস আগেই রোজার উপকরণের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া গত তিন দিন ধরে বিক্রেতারা বড় বাজার কাঠেরপুলে গরুর মাংস প্রতি কেজিতে ৫০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার যশোরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ী সুশীল কুমার বিশ্বাস জানান, তিনি গতকাল শুক্রবার নূরজাহান নামে মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৮ টাকা দরে বিক্রি করেছেন, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৬ টাকা। বিআর-২৮ ধানের চাল বিক্রি করেছেন ৫২ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা। কাজললতা পুরনো চাল বিক্রি করেছেন ৫৪ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২ টাকা। মিনিকেট বিক্রি করেছেন ৫৬ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৪ টাকা। বিআর-৬৩ ধানের চাল বিক্রি করেছেন ৬৪ থেকে ৬৬ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬৩ টাকা। বাংলামতি চাল বিক্রি করেছেন ৭২ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০/৭২ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে হাট-বাজারে ধানের সরবরাহ কমে গেছে। বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে মিল মালিক ও মজুদদাররা ধান কিনে মজুদ করেছেন। মূলত এখন চাল মিল মালিকদের হাতে। তারাই এখন বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন। এ কারণে চালের দাম বাড়ছে। বাজার করতে আসা ক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, এখনই যদি সরকারি সংস্থাগুলো তাদের নজরদারি না বাড়ান তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা চালের দাম আরও বাড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পাবে।
এদিকে, প্রতিবারের মতো এবারও রমজানের দু মাস আগেই রোজার প্রয়োজনীয় উকরণের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলা ও সব ধরনের ডালের কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা করে দাম বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার বড় বাজারে ছোলা প্রতি কেজি ৯০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১০৫ টাকা, খেসারির ডাল ৯৫ টাকা ও মুগ ডাল ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
শুক্রবার বড়বাজার কাঠেরপুলে গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। গত তিন দিন ধরে প্রতি কেজি গরুর মাংসে ৫০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। এর আগে গত দু তিন মাস প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা দরে সব বিক্রেতারাই বিক্রি করেছেন। জানতে চাইলে মাংস বিক্রেতা রাজ বিফ হাউজের স্বত্বাধিকারী মো. আব্বাস লোকসমাজকে জানান, বর্তমানে হাটে গরুর দাম বেড়ে গেছে। রমজান মাসের আগে আর দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে তিনি জানান।
শুধু চাল আর মাংস নয়, এ সপ্তাহে মুরগির ডিমের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল শুক্রবার বড় বাজারে প্রতি পিস খামারের মুরগি ডিম সাড়ে ১০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহেও মুরগির ডিম প্রতি পিস ১০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। দোকানিরা বলছেন খামার মালিকরা ডিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
বাজারে শীতের সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও সাম্প্রতিক ঘন কুয়াশায় লাউ ও বেগুন ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বড় বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী ‘মনিরামপুর ভাণ্ডারের  স্বত্বাধিকারী জহিরুদ্দিন কাজল লোকসমাজেকে জানান, ঘন কুয়াশায় লাউ আর বেগুনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ সবজিগুলোর ফলন কমে বাজারে সরবরাহে ঘাটতি হচ্ছে। গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৭০/৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। আর প্রতি পিস লাউ বিক্রি হয়েছে ৫০/৬০ টাকা।