বিজয়ের মাস

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ আজ ১২ ডিসেম্বর । ১৯৭১ সালের এই দিন পাকহানাদার বাহিনী দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর তাড়া খেয়ে ঢাকায় জড়ো হতে থাকে। ঢাকার প্রবেশ পথও অনেকখানি ছিল মিত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। হানাদার বাহিনীর পক্ষে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন সপ্তম নৌবহর আসার সম্ভাবনায় ছিল শেষ ভরসা। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানিরা বিদেশি সাহায্যের দিকে তাকিয়েছিল। কিন্তু সাহায্য না পেয়ে নিশ্চিত পরাজয় জেনে শেষ কামড় হিসেবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা চূড়ান্ত করে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের দীর্ঘ বক্তব্যের পর অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়। এদিন বঙ্গোপসাগর থেকে মাত্র ২৪ ঘন্টা দূরত্বে গভীর সমুদ্রে চলে আসে মার্কিন সপ্তম নৌবহর। রাতে রাও ফরমান আলী আলবদর ও আলশামসের কেন্দ্রীয় অধিনায়কদের ডেকে পাঠান সদর দপ্তরে। তার সভাপতিত্বে গোপন শলাপরামর্শ অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়। তাদের হাতে ফরমান আলী তুলে দেন বুদ্ধিজীবীসহ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নামের তালিকা। এদিন মেজর আবু তাহেরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভালুকা ও হালুয়াঘাট হয়ে ময়মনসিংহ সড়কের দিকে এগিয়ে যান। মুক্তি ও মিত্র বাহিনী দিনাজপুরের খানসামা থানা আক্রমণ করে। যুদ্ধে মিত্র ও মুক্তি বাহিনীর অনেকে নিহত হন। এদিন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর,কালিয়াকৈর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে মিত্রবাহিনী ছত্রীসেনা নামিয়ে দেয়। রাতে টাঙ্গাইলে পাকহানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায় মিত্রবাহিনী। তাদের সাহায্যে আসে কাদেরিয়া বাহিনী। এদিন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ও সোভিয়েত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে প্রায় এক ঘন্টা আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যার বিষয় বস্তু ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান।