বিজয়ের মাস

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ আজ ৭ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিন জামালপুর,ময়মনসিংহ,মধুপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুমুক্ত করে বীরদর্পে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। যশোরের কেশবপুর শত্রুমুক্ত করে রাইফেলের ডগায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উঁচিয়ে বিজয় উল্লাস করে মুক্তিবাহিনী। সেই বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠেন সর্বস্তরের মানুষ। আগের দিন স্বাধীন বাংলাদেশকে ভারত ও ভুটান স্বীকৃতি দেওয়ায় সবার মনে যুদ্ধ জয়ের আনন্দের বন্যা ভেসে বেড়ায়। এদিন সকালে যশোরের কেশবপুর এবং দুপুরে সিলেট মুক্ত হয়। আত্মসমর্পণ করে অনেক পাক বাহিনী। মৌলভীবাজারের কালেঙ্গায় প্রচ- লড়াইয়ে মিত্রবাহিনীর ১২৭ সেনা শহীদ হন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মৌলভীবাজার থেকে পালিয়ে যায়। মিত্রবাহিনী যশোর রোড ছেড়ে সীমান্তের কাছে পাকিস্তানি ব্যুহ ভেদ করে এগিয়ে যায়। যশোর ক্যান্টনমেন্ট রক্ষা করতে হানাদার বাহিনী যশোর রোডে সীমান্তের কাছাকাছি নাভারণ ও শার্শার মধ্যে দেড় মাইল লম্বা,চব্বিশ ফুট চওড়া ও পাঁচ ফুট গভীর পরিখা খনন করেছিল, তা ভেদ করতে মিত্রবাহিনীকে সাহায্য করে মুক্তিবাহিনী। রণাঙ্গনে পাকিস্তানের এমন বিপর্যয়ে দেশটির মিত্র মার্কিন প্রতিনিধি এদিন পুনরায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তোলে আবারও। এ নিয়ে দুইবার দেশটি একই প্রস্তাব তোলে এবং তা বাতিল হয়ে যায়। সোভিয়েত প্রতিনিধি পুনরায় ভেটো দেওয়ায় প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়। বাংলাদেশ ইস্যুতে ফের বির্তক শুরু হয় সাধারণ পরিষদে। তুমুল বাকযুদ্ধ চলে জাতিসংঘের ভারতীয় স্থায়ী প্রতিনিধি সমর সেন ও পাকিস্তানি প্রতিনিধি আগা শাহীর মধ্যে। এদিন শেষ রাতে (বাংলাদেশ সময়) সাধারণ পরিষদ জরুরি আলোচনায় বসে। আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল,ক্যামেরুন, জাপান, ইকুয়েডর, ঘানা, হাইতি,হন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া,ইতালি,আইভরি কোস্টসহ বিভিন্ন দেশ খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে। প্রস্তাবে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও লড়াই থামিয়ে পূর্ব পাকিস্তান সমস্যার সমাধান এবং সেখানকার জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে পুনরায় পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।