সাশ্রুনয়নে কারাগারের ভেতর থেকে পিতাকে শেষ বিদায় যুবদল নেতার

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পিতার জানাজায় অংশ নিতে পারলেন না কারাবন্দী যশোর জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলাম। কারাফটকের সামনেই পিতাকে দেখলেন শেষ দেখা। সেখানেই পিতাকে শেষবারের মত একনজর দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এ সময় পিতাহারা সন্তানের বুক ফাটা আর্তনাদে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে যুবদল নেতা কামরুল ইসলামের পিতা আব্দুল আজিজ কিসমত নওয়াপড়ার নিজ বাড়িতে ইন্তিকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। তার সাত ছেলে, এক মেয়ে ও নাতি- নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রয়েছে। মৃত্যুর সংবাদ শুনে শোকাহত স্বজনদের সমবেদনা জানাতে তার বাড়িতে যান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম।
মরহুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, তিনি ৪ বছর ধরে গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। এদিন বেলা সাড়ে ১২টায় মরহুম আব্দুল আজিজকে তার কারাবন্দী ছেলে কামরুল ইসলামকে শেষবারের মত দেখানোর জন্য যশোর কেন্দ্রীয় কারা ফটকের সামনের নিয়ে আসা হয়। সেখানে পিতাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন ছেলে কামরুল ইসলাম।
এদিন বাদ আছর কিসমত নওয়াপাড়া শহীদ স্মরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে যুবদল নেতা কামরুল ইসলামের পিতা আব্দুল আজিজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা নামাজের আগে পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের ছেলে ও নওয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রাজু আহমেদ পিতার জন্য সবার কাছে দোয়া ও ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য দেন। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনোয়ারুল কবির নান্টু, জেলা যুবদলের সহসভাপতি আশফাকুর রহমান মিল্টন,বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান প্রমুখ। জানাজা শেষে তাকে পারিববারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
যুবদল নেতা কামরুল ইসলাম গত ২৮ অক্টোবর ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পর ওই রাতেই পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর থেকে তিনি কারাবন্দী ।
যুবদল নেতা কামরুল ইসলামের পিতা আব্দুল আজিজের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ( খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম।
পৃথক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, বতর্মান কর্তৃত্ববাদী সরকার দেশে এমনই এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যেখানে একজন সন্তান তার জন্মাদাতা পিতার জানাজায় অংশ নিতে পারলো না। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। জানি না এই নিষ্ঠুরতার শেষ কোথায়?আশা করবো আর যেন কোন সন্তানকে সরকারের বিরোধী মতের রাজনীতি করার কারণে এমন পরিস্থিতি মুখোমুখি না হতে হয়। দোয়া করি মহান রাব্বুল আলামিন যেন মরহুমকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম ও শোকাহত স্বজনদের ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা দেন।