বেনাপোলে রাজস্ব আদায়ে ধস

0

মো.কামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) ॥ বেনাপোল কাস্টমস কর্মকর্তাদের হয়রানির কারণে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু আমদানিকারক এই বন্দর দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। মোটরপার্টস, ফেব্রিকস, আয়রন, স্টিল,আপেল ও মোটরগাড়ি আমদানিকারকরা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। এসব পণ্য থেকে ২০১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। গত ৪ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। তার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। সেই হিসেবে ২৪০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩১৩ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে এখনও পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীরা জানান,কাস্টমস হাউসের ব্যাপক কড়াকড়ি,অনিয়ম ও হয়রানির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আর্থিক লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা নিশ্চিত হলে বাণিজ্যে আবারও গতি ফিরবে বেনাপোল বন্দরে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ ওয়্যারহাউজিং কর্পোরেশনের অধীনে বেনাপোল দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি ও রফতানির কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০২ সালে মর্যাদা পায় স্থলবন্দরের। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানির বাণিজ্যে সরকারের বড় অংকের রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়, যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে।
সি অ্যান্ড এফ ব্যবসায়ী জুয়েল রানা জানান, ভারতের নাসিক থেকে আসা আপেলসহ অন্যান্য উচ্চ পচনশীল পণ্যের চালান আসতে প্রায় তিনদিন সময় লাগে। এর ফলে অধিকাংশ কার্টনের ফল পচে যায়। এধরনের পচনশীল পণ্যের রাজস্ব নেওয়াতে অধিকাংশ আমদানিকারক বেনাপোল বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ সিঅ্যান্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান জানান, রাজস্ব আদায়ে সবচেয়ে বড় ধসের কারণ হলো কাস্টমস হাউসে ডকুমেন্ট সাবমিট করার পর নিচের অফিসারদের অতিরিক্ত হয়রানির কারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে পণ্যের এইচ এস কোড ও ভ্যালু নিয়ে জটিলতার কারণে রাজস্ব আদায় কমে গেছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার শাফায়েত হোসেন জানান,রাজস্ব আদায়ের মূলত ঘাটতি হয়েছে, উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায়। বিশেষ করে মোটরগাড়ি ও মোটরপার্টস থেকে ২০১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। আপেল আমদানিতে ২৪ কোটি ও ফেব্রিকস আমদানিতে ২১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। সর্বমোট ৩১৩ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে।