শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু, আজ মহাষষ্ঠী

0

স্টাফ রিপোর্টার॥আজ শুক্রবার মহা দুর্গাষষ্ঠী। শিউলি সুবাসিত হয়ে আলোর দিশারী অসুর বিনাশিনী শ্রীশ্রী দুর্গা মা- তার চার পুত্র-কন্যা নিয়ে হিমালয় থেকে মর্ত্যে আগমনের দিন আজ। মন্দিরে মন্ডপে ধ্বনিত হবে ‘রূপং দেহি, যশো দেহি, জয়ং দেহি, দ্বিষো জহি।’
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে নানা ধর্মীয় মাঙ্গলিক আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ১৪ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের শুরু হয়েছে। আজ ২০ অক্টোবর সকালে ষষ্ঠাদী কল্পারম্ভে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস, ওই দিন বিকেলে পূজা আরম্ভ। ২১ অক্টোবর সকালে মহাসপ্তমী, ২২ অক্টোবর সকালে মহা অষ্টমী, সন্ধিপুজো রাত আটটা ৬ মিনিট থেকে রাত আটটা ৫৪ মিনিট পর্যন্ত, ২৩ অক্টোবর সকালে মহানবমী পূজা কল্পারম্ভ এবং ২৪ অক্টোবর সকালে মহাদশমী কল্পারম্ভ- পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটের মধ্যে।
যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রম ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী জ্ঞানপ্রকাশানন্দ মাহারাজ জানান, শাস্ত্রমতে এ বছর দেবীর আগমন ঘটকে (ঘোড়া); এবং কৈলাসে ফিরে যাবেনও ঘটকে। দেবীর ঘোড়ায় যাতায়াতের ফল হল ‘ছত্রভঙ্গস্তুরঙ্গমে’ অর্থাৎ সবকিছু ছত্রভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। নানা গোলমাল, দাঙ্গাহাঙ্গামা, ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট দ্বারা বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা ঘটে থাকে। ঘোড়া ছটফটে প্রাণী। তাই সে যখন যায়, সব কিছু ছত্রভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে ফসল নষ্ট হওয়ার এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা ও খরা দেখা দিতে পারে। মহামারি ও রাজনৈতিক অস্থিরতাও হতে পারে।
এ বছর যশোর জেলার ৮ উপজেলায় গত বছরের চেয়ে ৯টি বেড়ে ৭৩২টি মন্দির ও মন্ডপে পূজার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। এ বছর যশোরে সদর উপজেলায় ১৬৭টি মন্দির ও মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে; এরমধ্যে পৌরসভায় পূজা হবে ৫০টি, অভয়নগর উপজেলায় পূজা হবে ১৩৪টি; এরমধ্যে পৌরসভায় ২০টি, মণিরামপুরে পূজা হবে ৯৯টি, এরমধ্যে পৌরসভায় ৯টি, কেশবপুরে পূজা হবে ৯৮টি, এরমধ্যে পৌরসভায় ৯টি, বাঘারপাড়ায় পূজা হবে ৯৭টি এরমধ্যে পৌরসভায় ৪টি, ঝিকরগাছায় পূজা হবে ৫৬টি, এরমধ্যে পৌরসভায় ৯টি, চৌগাছায় পূজা হবে ৪৯টি, এর মধ্যে পৌরসভায় ৭টি ও শার্শায় পূজা হবে ৩২টি এরমধ্যে পৌরসভায় চারটি।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে দেবী পক্ষের পঞ্চমী তিথি শেষে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪৭ মিনিটে শুরু হচ্ছে মহাষষ্ঠী তিথি; যা থাকবে শুক্রবার রাত ৯টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত।
শাস্ত্রমতে নানা ধর্মীয় মাঙ্গলিক আচার অনুষ্ঠানে এ তিথিতেই সূর্যোদয়ের পর বোধনের মধ্য দিয়ে বাঙালি সনাতন ধর্মবিশ্বাসীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সার্বজনীন উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার কল্পারম্ভ আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। এদিন বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবীর নিন্দ্রা ভাঙার জন্যে বন্দনা করা হবে। বোধন অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্ত। এটি দুর্গাপূজার অন্যতম একটি আচারানুষ্ঠান।
যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রম সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টায় ষষ্টাদি কল্পারম্ভে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস এবং বিকেল ৫টায় পূজা আরম্ভ।
এদিকে মহাষষ্ঠীতে মাকে বরণ করে নিতে আরাধনায় মেতে উঠছে বাংলার সনাতন ধর্মবিশ্বাসীরা। দুর্গতিনাশিনী আনন্দময়ী মা- দুর্গার আগমনে আনন্দে তারা উদ্বেলিত। একইসাথে দেবী বন্দনায় উদ্বেলিত যশোরের সনাতন ধর্মবিশ্বাসীরা। এখন শুধু অপেক্ষা সেই মাহেন্দ্রক্ষণের।