দমনে ভূমিকা নেই জিআরপি ও চাঁচড়া ফাঁড়ির যশোর রেল স্টেশন এলাকায় বেপরোয়া ছিনতাই ও চাঁদাবাজ চক্র

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর রেলস্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চরমে পৌঁছেছে। প্রায় প্রতিদিন এ এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ট্রেন যাত্রী ও পথচারীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা টাকাসহ মালামাল কেড়ে নিচ্ছে। এসব দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ট্রেন যাত্রী এমনকি রেলওয়ে পুলিশ সদস্যরাও জখম হচ্ছেন। বেপরোয়া এ চক্র দমনে যশোর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ও চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুৃক স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, রেলস্টেশন এলাকায় চিহ্নিত দুর্বৃত্তদের দৌরাত্ম্যের কারণে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দুর্বৃত্তরা এলাকায় চিহ্নিত। এদের মধ্যে রয়েছে রেলস্টেশন ওভার ব্রিজের পূর্ব দক্ষিণের শংকরপুর তুলোতলা এলাকার জাফরের ছেলে ইকরাম, আশ্রম রোড মহিলা মাদ্রাসার পেছনে গাড়োয়ানপট্টির ইজিবাইকচালক আলীর ৩ ছেলে হাসিব, অমিত ও মেহেদী, ডাব বিক্রেতা আব্দুস সামাদের ছেলে তৌহিদুল, আব্দুল হান্নান ওরফে টনুর ছেলে জাফর এবং আশ্রম রোডের আব্দুর রশিদ ডাক্তারের পালিত ছেলে রুবেল। তারা দীর্ঘদিন ধরে ট্রেন যাত্রী ও পথচারীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকাসহ মালামাল কেড়ে নিচ্ছে। সন্ধ্যা নামলেই ছিনতাইকারীরা ওভার ব্রিজের ওপরে, পূর্বে, দক্ষিণে এবং রেলওয়ে ভূমি অফিস সংলগ্ন সিঙ্গাড়া-পুরির খুপরি হোটেলের পাশে ওৎঁপেতে থাকে। ভোর পর্যন্ত থাকে তাদের অপতৎপরতা। কোনো ট্রেন যাত্রী অথবা পথচারীকে একাকি পেলেই অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকাসহ মালামাল ছিনিয়ে নেয় তারা। বাধা দিলে ছুরিকাঘাত অথবা কুপিয়ে জখম করছে। দুর্বৃত্তরা ভয়ভীতি দেখিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও চাঁদা আদায় করে থাকে।
সূত্র জানায়, গত ১৭ জুলাই গভীর রাতে ওভার ব্রিজের ওপর দায়িত্ব পালনকালে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম হন রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল আনিছ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওভার ব্রিজের পূর্ব দক্ষিণ পাশে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে জখম হন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আদনান আহমেদ প্রান্ত। ছিনতাইকারীরা তাকে টাকা ও মোবাইল ফোনসেট দিতে বলেছিলো। অস্বীকার করায় তারা তাকে ছুরিকাঘাত করে।
স্থানীরা জানান, ওই দুর্বৃত্তরা মাদকাসক্ত। দিনের বেলায় তারা ওভার ব্রিজের পূর্ব দক্ষিণ এলাকার কানা ইয়াছিনের বস্তিতে এবং পূর্ব উত্তরে গ্রামীণ ফোন টাওয়ারের পাশের বস্তির হজু মোল্লার বাড়ির সামনে অবস্থান করে থাকে। সেখানে তারা মাদকদ্রব্য সেবনসহ ছিনতাইয়ের টাকা ভাগাভাগি করে। এসব ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজের লালনকারী ষষ্ঠীতলা এলাকার একটি অপরাধী চক্র। তাদের একটি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন মিছিল ও সমাবেশও যেতে দেখা যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রেলস্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজরা বেপরোয়া হয়ে উঠলেও তাদের দমনে পুলিশের কোনো ভূমিকা নিতে দেখা যায় না। এলাকাটি চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ি ও রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির আওতাধীন। কিন্তু এই দুই ফাঁড়ির পুলিশ দুর্বৃত্তদের দমনে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না। যে কারণে দুর্বৃত্তরা আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোন করা হলে চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইনসপেক্টর তারিকুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে যশোর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান দাবি করেন, তারা ট্রেন যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ দায়িত্ব পালন করে আসছেন।