সদর উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান ও নরেন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টারি ॥ যশোর সদর উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল ও নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে লিজের শর্ত ভঙ্গ করে বেআইনিভাবে জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন শুভাশিস সাহা নামে এক ব্যক্তি। তিনি নিজেকে পেপার ট্রি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড এবং ডাবল এ ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক কোম্পানি লিমিটেডের নামের প্রতিষ্ঠানের কনসালটেন্ট ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে পরিচয় দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শুভাশিস সাহা জানান, পেপার ট্রি বাংলাদেশ কোম্পানি ২০১১ সালে যশোরের হাটবিলা নরেন্দ্রপুরে ২৪ বিঘা জমি ক্রয় করে। জমিটি ক্রয়ের পরে কোম্পানি প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচ করে জমির ভেতরে একটি কংক্রিট রাস্তা, সুরক্ষিত প্রাচীর ও উঁচুনিচু স্থান মাটি ভরাট করে। পরবর্তীতে সরকারিভাবে জমিটি বাণিজ্যিকীকরণের অনুমোদন নেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, কোম্পানি পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করায় সেখানে কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে না উঠায় বিস্তীর্ণ জমিটি দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ ও পতিত অবস্থায় পড়ে থাকে। এমতাবস্থায় যথাযথ সংরক্ষণের জন্যে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে জমির চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্যে আরসিসি পিলার, কাঁটা তারের বেড়া দেয়া হয়। এছাড়া জমিতে প্রবেশের জন্যে গেইট, একটি অফিস ঘর নির্মাণ, টিউবওবয়েল ও বাথরুম স্থাপন করা হয়। একই সময়ে জমিতে উঁচুনিচু জায়গা সমান্তরাল করার জন্যে ১০ লক্ষাধিক টাকার মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়। এসব উন্নয়ন কার্যক্রমে সর্বমোট ২০ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। এমনকি এটির সার্বিক নিরাপত্তায় দেখভালের জন্যে সেখানে একজন প্রহরী নিয়োগ দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভাশিস সাহা অভিযোগ করেন, জমিটিকে উপযুক্ত করার পরপরই যশোর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল ও একই উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদের সাথে তার মৌখিকভাবে জমিটি কৃষিকাজ ও মৎস চাষ করার জন্যে আলাপ-আলোচনা হয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের মে মাসে ১০ টি শর্তে লিখিত চুক্তি করা হয়। শর্ত অনুযায়ী কৃষি খামার ও মৎস্য চাষের জন্যে নিজস্ব অর্থ বিনিয়োগ করার কথা। কিন্তু তা না করে তারা প্রতারণা ও বেআইনিভাবে রাতের আঁধারে জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার ট্রাক মাটি কেটে জমির ক্ষতি করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছি। এমনকি র‌্যাব ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে দেখাও করেছি। কিন্তু তারা শুধুমাত্র আমাকে আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন। উপরন্তু আমি প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকির শিকার হচ্ছি। যা রীতিমত আমার প্রাণনাশের হুমকির পর্যায়ে চলে গেছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে এ বিষয়ে তিনি মিডিয়াকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল ও নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ। তারা বলেন, শুভাশীষ সাহা নিজেই একজন প্রতারক। জমিটি আমাদের কাছে বিক্রি করার কথা বলে কয়েক দফায় প্রায় ৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু জমিটি তিনি আমাদের লিখে দিতে পারেননি। এজন্যে পরে তিনি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ভাড়া দিয়েছেন। কিন্তু এখন দলিল করে দিতে বললে তিনি মোটা অংকের টাকা দাবি করছেন। নতুন করে টাকা না দেওয়ায় ও আগে দেওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় শুভাশিস সাহা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছেন।