চৌগাছার শিক্ষক তসলিমের শাস্তির দাবিতে মিছিল

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় শিক্ষক কর্তৃক একাধিক ছাত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত একটি বিদ্যালয়। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ক্লাস ছেড়ে দিনের বেশির ভাগ সময় সড়কে এসে দফায় দফায় মিছিল করেছে। খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের শান্ত করে ক্লাসে ফিরে যেতে বলেন। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছেন অভিভাবকরা। সবাই অভিযুক্ত শিক্ষক তসলিমুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
চৌগাছা ছারা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে রোববার সকালে সমাবেশ চলাকালীন অন্তত সাত ছাত্রীকে বেধড়ক মারপিট, গালমন্দ ও স্কুল ড্রেস ছিঁড়ে ফেলেন বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক তসলিমুর রহমান ওরফে তসলিম। এ অভিযোগ নিয়ে এক শিক্ষার্থী তার অভিভাবককে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যায়। ঘটনাটি আমলে নিয়ে নির্বাহী অফিসার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এ ঘটনার এক দিন পর সোমবার সকালে বিদ্যালয়ের সকল শ্রেণির ছাত্রীরা একত্রিত হয়ে শিক্ষক তসলিমুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ছেড়ে সড়কে চলে আসে। তারা বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে পুনরায় বিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। এ সময় প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা ছাত্রীদের সাথে কথা বলে ক্লাসে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু আলোচিত শিক্ষক তসলিমুর রহমান প্রতিষ্ঠানে থাকা অবস্থায় তারা ক্লাসে ফিরবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। খবর পেয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ক্লাসে নিতে সক্ষম হন এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে বিদ্যালয় ত্যাগের নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে অসংখ্য অভিভাবক প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবি করেন। অভিভাবক হাসিবুল ইসলাম, মুক্ত, বজলুর রহমান, ইউনুচ আলীসহ একাধিক অভিভাবক বলেন, কোন শিক্ষক তার ছাত্রীকে গালমন্দ ও স্কুল ড্রেস ছিঁড়ে দিতে পারেন না। তিনি শিক্ষক নামের কলঙ্ক। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, সকালে বিদ্যালয়ে এসেই মেয়েরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা বাজারে এসে মিছিল করে। আমরা সকলকে ক্লাসে যেতে বলি। খবর পেয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা মহোদয় এসে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নিয়ে যান। কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করেছেন।
চৌগাছা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, রোববারের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কোন শিক্ষকই ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে এহেন আচরণ করতে পারেন না।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম মো. রফিকুজ্জামান বলেন, রোববারের ঘটনায় মেয়েরা ক্ষুব্ধ। তারা সোমবার মিছিল বের করে এবং ক্লাস বর্জন করে। খবর পেয়ে নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে মেয়েদের ক্লাসে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক অব্যহতি দেয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় জানেন। দ্রুতই শিক্ষক তসলিমুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, বহুল আলোচিত শিক্ষক তসলিমুর রহমান একজন আওয়ামী লীগ নেতা।