বেনাপোল শুল্ক ও গেয়েন্দা তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফীন জাহেদীর বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ

0

 

কামাল হোসেন, বেনাপোল॥ বেনাপোল শুল্ক ও গেয়েন্দা তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফীন জাহেদীর বিরুদ্ধে হয়রানি ও নানাভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
শুল্ক গোয়েন্দার ডিসির কাজ হচ্ছে বড় ধরনের শুল্ক ফাঁকি ধরা। কিন্ত তিনি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে অধিকাংশ পণ্যচালান লক করে রাখেন। কাস্টমস কর্মকর্তারা একটি পণ্য চালান শতভাগ পরীক্ষণ কাজ সম্পন্ন করার পর ডিসি আরেফীন ওই পণ্যচালান লক করে দেন। পরে একই পণ্যচালান ফের শুল্ক গেয়োন্দারা শতভাগ পরীক্ষা করেন ৪/৫দিন ধরে। ফলে একটি পণ্য চালান ২ বার শতভাগ পরীক্ষা করায় পণ্যেও গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে ব্যবসায়ীরা রাজস্ব জমা দিয়ে তাদের পণ্যচালান খালাশ করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারেন না। পরীক্ষণের সময় প্রতিটি প্যাকেজ কেটে ছিঁড়ে পরীক্ষা করায় নষ্ট হয় প্যাকেজ। ফলে কাটা ছেঁড়া প্যাকেজের পণ্য ক্রেতারা কিনতে চান না। এ কারণে ব্যবসায়ীদের মোটা অংকের আর্থিক লোকসান হচ্ছে।
শুল্ক গোয়েন্দারা কোন পণ্যচালান দেখতে চাইলে তারা কাস্টমসের সাথে যৌথভাবে পরীক্ষা করলে একই প্যাকেজ বারবার কাটাছেঁড়া করা লাগে না। ৩/৪ দিনেই একটি চালান পরীক্ষণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।
শুল্ক গোয়েন্দাদের এ ধরনের হয়রানির কারণে অধিকাংশ আমদানিকারক এই বন্দর ছেড়ে এখন একই পণ্য কোন ঝুঁকি ছাড়াই চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসছেন। ফলে সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব হাতছাড়া হচ্ছে।
গত ৫ জুলাই ভারত থেকে আমদানি করা দুটি মাছের চালান আটকে ৮ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে রাতের আধারে কাস্টমস কর্মকর্তাদের অবহিত না করে গোপনে ছেড়ে দেন ডিসি আরেফিন জাহেদী। বিষয়টি জানাজানি হলে কাস্টমসের একজন যুগ্ম কমিশনার ৩দিন পর শুল্ক গোয়েন্দার ডিসি আরেফীনের বিরুদ্ধে ৩ পৃষ্ঠার একটি নোট লেখেন। যেসব পণ্যচালান শুল্ক গোয়েন্দারা পরীক্ষা করেন সেসব চালান থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করা হয় বলে অভিযোগ করেছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।

বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, শূুল্ক গোয়েন্দার ডিসি আরেফীন জাহেদী যোগদানের পর ব্যবসায়ীদের হয়রানির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি প্রায়ই পণ্যচালান লক করে কাস্টমসকে অবহিত না করে ৪/৫ দিন ধরে শতভাগ পরীক্ষণের নামে হয়রানি করেন। সেইসাথে গুণতে হয় মোটা অংকের টাকা। টাকা ছাড়া কোন কাজ হয়না।
শার্শা উপজেলা দুর্নীতি দমন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান লেটো জানান, বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দার ডিসি আরেফীন ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হয়রানি করেন। তার বিরুদ্ধে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমরা জরুরিভাবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব।

বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফিন জাহেদীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আপনি কে? সব বিষয়ে আপনার সাথে কথা বলতে হবে? তিনি বলেন, আমরা যথা নিয়মে কাজ করছি। ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অফিসে আসেন, কথা হবে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আব্দুল হাকিম জানান, শুল্ক গোয়েন্দারা যে দুটি মাছের চালান আটক করে আবার ছেড়ে দিয়েছেন সে বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি। ফাইল আমাদের কাছে আসলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ফকরুল ইসলাম জানান, বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফিন জাহেদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আপনারা কাগজে লেখেন। আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।