কামলা খেটে লেখাপড়া করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ইমরান

0

কাটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা॥ পরের জমিতে কামলা খেটে লেখাপড়া করে  জিপিএ-৫ পেয়েছে ইমরান। চরম দরিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় এমন সফলতা অর্জন করেছে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার সোয়াদী গ্রামের ভ্যানচালক আদম আলীর ছেলে ইমরান হোসেন। ইমরান হোসেন বিজ্ঞান বিভাগে সাফদারপুর মুনছুর আলী একাডেমি থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ অর্জন করে।
ভ্যানচালক আদম আলী বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। যে কারণে ভ্যানগাড়িও ঠিকমত চালাতে পারিনা।। নিজের ওষুধ, সংসার ও ছেলের স্কুলে লেখাপড়া খরচ চালাতে না পারায় আমার স্কুলে পড়া ছেলে নিজেই পড়াশুনার পাশাপাশি পরের জমিতে কামলা খাটে খরচ মেটাতে।
মা রোজিনা বেগম বলেন, আমার ছেলে ভীষণ মেধাবী । সংসারে শত কষ্টের পরেও সে লেখাপড়া ছাড়েনি। বরং পরের জমিতে কামলা খেটে সংসারের পাশাপাশি তার লেখাপড়াও চালিয়ে আসছিলো। এখন ইমরান ভাল ফলাফল করলেও তার লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
ইমরান হোসেন তার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করতে গিয়ে শঙ্কার কথারও বলে। সে বলে, আমার ভীষণ ইচ্ছা ডাক্তার হয়ে আমাদের মত অসহায় পরিবারের সেবা করার। কিন্তু ভাল কলেজে ভর্তি হতে হলে অর্থের প্রয়োজন। যা আমাদের নেই। এখন কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। পিতা অসুস্থ। বেশির ভাগ সময় বিছানায় থাকেন।। শরীর একটু ভাল লাগলে ভ্যান নিযে বেরিয়ে পড়েন সংসারের চাহিদা মেটাতে।
ওই এলাকার মনিরুল ইসলাম মন্টু বলেন, ভ্যানচালক আদম আলীর সহায়-সম্পদ বলতে আছে শুধু ৭ শতক ভিটেমাটি। তার দ্বারা নির্বিঘ্নে মেধাবী ছেলের লেখাপড়া করানোর অবস্থা নেই। যদি সমাজের বিত্তবান বা কোন প্রতিষ্ঠান ছেলেটির লেখাপড়ার সাহায্যের জন্যে এগিয়ে আসে তা হলে এই ছেলেটি একদিন তার আপন লক্ষ্যে পৌঁছে সমাজে ভাল ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
সাফদারপুর মুনছুর আলী একাডেমির শিক্ষক চৌধুরী আফছার উদ্দীন বলেন, ইমরান হোসেন ভীষণ মেধাবী ছাত্র।দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও লেখাপড়ায় সে ভীষণ মনোযাগী। সহযোগিতা পেলে সে অনেক দূর এগোতে পারবে।