চৌগাছায় পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষি

0

 

চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা॥ যশোরের চৌগাছায় পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। বর্ষার ভরা মৌসুম হলেও বৃষ্টির দেখা তেমন মেলেনি। মাঝেমধ্যে সামান্য বৃষ্টি হলেও তা খাল বিলে জমেনি। উপজেলার বুক চিরে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। গেল বছর থেকে নদ খননের কাজ শুরু হয়েছে। ফলে নদে পাটজাগ দিতে পারছেন না নদের দু-পাড়ের চাষিরা। এদিকে এলাকায় সরকারি বিল-বাওড়গুলো ব্যক্তি মালিকানায় লিজ দেয়ায় বিল-বাওড়ে পাট জাগ দিতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে পাট জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর উপজেলায় জিআরও ৫২৪ জাতের ১৮৬০ হেক্টর ও তুষা ৮ রবি জাতের ১৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের পাটচাষি জহির উদ্দীন বলেন, এবার চাষের শুরুতে চাষিদের বৈরি আবহাওয়া মোকাবেলা করতে হয়। বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে পাটবীজ বুনতে হয়েছে। খরার সময়ে মাঝেমধ্যে সেচ দিতে হয়। এতে পাট চাষের খরচ বেড়ে গেছে। বর্তমানে কোন-কোন এলাকায় আগাম জাতের পাট কাটা শুরু হয়েছে। এ পাট কেটে তারা আউশ ধান রোপণ করছেন। খাল-বিলে পানি না জমায় দূরে নিয়ে জাগ দিতে হচ্ছে। এতে খরচ বাড়ছে। ঋতু পরিক্রমায় বর্ষাকাল চলছে। কিন্তু বর্ষার দেখা যেন মিলছেনা। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হলেও এখন পর্যন্ত খালবিলে পানি আসেনি। ভরেনি নদ-নদী। এ বছর পাটের দামও ভালো। কিন্তু পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পাটচাষিরা।

এদিকে উপজেলার নারায়নপুর, পাশাপোল, ধুলিয়ানী, স্বরুপদাহ, ফুলসারা, চৌগাছা সদর ও সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় পাট কাটা শুরু করেছেন। নতুন পাট হাটেও উঠতে শুরু করেছে। প্রতি মণ পাট আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে পাট ভালো হলেও পানির অভাবে জাগ দিতে পারছেন না। অনেকে কেটে জমিতে রেখে দিয়েছেন।

উপজেলার রাজাপুর গ্রামের চাষি আতিয়ার রহমান জানান, এবার চাষ করা পাটের ভালো ফলন হবে। তবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় আছি। আমরা পাট কাটা শুরু করিনি। তবে আমাদের এলাকায় আগাম বোনা পাট অনেকে কাটছেন। নতুন পাট বাজারে প্রতি মণ দুই হাজার ৮৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা পাট উন্নয় কর্মকর্তা নিপা বিশ্বাস বলেন, উপজেলায় এ বছর ২৫৭৫ জন কৃষক পাট চাষ করেছেন। এ অঞ্চলে এবার পাট ভালো হয়েছে। তবে পানি ও জায়গার অভাবে পাট জাগে সমস্যা হচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে সমস্যা কেটে যাবে বলে জানান তিনি।