মোংলায় নির্যাতনের পর বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ

0

মোংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা॥ মোংলায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েদের গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করে পরে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ সময় উচ্ছেদ করতে আসা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) শাহীনুর আলমের পা ধরেও রক্ষা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। উল্টো নিরাপত্তা কর্মীদের দিয়ে তাদের মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম মুন্সি। বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে মোংলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেশের জন্যে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। দেশ স্বাধীন করেও তার নিজস্ব কোন জমি বা বাড়ি নেই। তাই ২০০০ সাল থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গা লিজ নিয়ে খাজনা দিয়ে স্ত্রী ও সাত ছেলে- মেয়ে নিয়ে সেখানে ঘর উঠিয়ে বসবাস করে আসছেন। পশুর নদীর পাড়ে স্থায়ী বন্দর এলাকায় গোলপাতার ছাউনি দিয়ে থাকা এই বীর মুক্তিযোদ্ধার আয়ের উৎস কৃষি কাজ এবং সরকারি ভাতা। ২০১১ সালে জায়গা বরাদ্দ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করলে বন্দর কর্তৃপক্ষের তৎকালীন চেয়ারম্যান তাদের জায়গায় বসবাস করার অনুমতি দেন। সেই থেকে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে তিনি সেখানেই বসবাস করে আসছিলেন।
কিন্তু গত ৪ জুলাই পরিচালক (প্রশাসন) শাহীনুর আলম বন্দর কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ে এসে ছেলে-মেয়েদের গাছের সাথে বেঁধে তার বসতভিটা থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মুন্সির স্ত্রী রহিমা বেগম পরিচালকের হাত- পা ধরে কেঁদে কেঁদে আকুতি করলে তাকে গালিগালাজ ও নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে মারধর করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। এ সময় পরিচালক (প্রশাসন) শাহীনুর আলমের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রহিমা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে তার এবং তার পরিবারের ওপর নির্যাতনের বিচার চান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) শাহীনুর আলম সাংবাদিকদের বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মুন্সি দীর্ঘদিন বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গায় অবৈধভাবে বসবাস করে আসছিলেন। একাধিকবার তাকে সরে যেতে বললেও তিনি না যাওয়ায় গত ৪ জুলাই তাকে উচ্ছেদ করা হয়। তার পরিবারের ওপর কোন নির্যাতন করা হয়নি দাবি করে এই কর্মকর্তা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামকে আপ্যায়ন করে ওই জায়গা ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোংলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপংকর দাস বলেন, ‘যেহেতু নুরুল ইসলাম মুন্সি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাই বিষয়টি অধিকতর যাচাই পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।