রাজগঞ্জে কাঁচা মরিচের আকাশচুম্বি দাম

0

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর) ॥ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারে হঠাৎ করে কাঁচা মরিচের দাম মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে মরিচের ঝাঁঝে সোমবার হাটে আসা ক্রেতারা দিশেহারা হয়ে পড়েন।
সরজমিনে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহ আগেও বৃহত্তর এ শহরে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ১০০টাকা থেকে ১১০টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সোমবার হঠাৎ করে রাজগঞ্জ বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৩২০টাকায়। এতেকরে নিম্ন এবং মধ্য আয়ের মানুষের পক্ষে কাঁচা মরিচ কেনা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ক্রেতারা অতি প্রয়োজনে কাঁচা মরিচ কিনলেও ১শ গ্রামের বেশি কিনতে পারছেন না। তবে কাঁচা মরিচের দামে দিশেহারা হয়ে অধিকাংশ ক্রেতা আবার কাঁচা মরিচের বিকল্প হিসেবে শুকনো মরিচ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। উপজেলার রাজগঞ্জ কলেজপাড়ার স্কুলছাত্র ইউসুফ আলী জানায়, গত ২৬ জুন সকালে ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ কিনতে রাজগঞ্জ হাটে আসে সে। কিন্তু কাঁচা মরিচের আকাশচুম্বি দামের কারণে কিনতে পারেনি।
ক্রেতা ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার গ্রামের আমিনুর রহমান জানান, রাজগঞ্জ বাজারে কাঁচা মরিচের যথেষ্ট আমদানি রয়েছে। তারপরও ব্যবসায়ীরা ঈদকে সামনে রেখে অধিক মুনাফা লাভের আশায় মাত্রাতিরিক্ত চড়া দামে কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন। যে কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ কাঁচামরিচ কিনতে পারছেন না। ৩২০টাকা কেজি বিক্রি হলেও মরিচের মান মোটেও ভাল না বলে দাবি করেন এ ক্রেতা।
রাজগঞ্জ বাজারের সবজি ব্যবসায়ী ইব্রাহীম হোসেন ও সাহেব আলী জানান, বাজারে কাঁচা মরিচের আমদানি অনেক কম। সে কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু পাইকার বাজারে কাঁচা মরিচের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চড়াদামে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ করেন এ দুই ব্যবসায়ী। তবে অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক রয়েছে।
মশ্মিমনগর ইউনিয়নে রামপুর গ্রামের সবজি চাষি মোজাফফার হোসেন তোতা জানান, সম্প্রতি তীব্র তাপদহের কারণে ক্ষেতের অধিকাংশ মরিচ গাছ শুকিয়ে মারা যাওয়ায় উৎপাদন অনেকটা কমে গেছে। আর এ কারণেই কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে গেছে বলে দাবি করেন এ কৃষক।
রাজগঞ্জ বাজার উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও চালুয়াহাটি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ জানান, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় কাঁচা মরিচের তীব্র সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
মণিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অঞ্জলী রানী জানান, বৃহত্তর এ উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১৭টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৫৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের মরিচ চাষ হয়েছে। কাঁচা মরিচের কোন সংকট নেই। তবে অধিক মুনাফা লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চড়া দামে বিক্রি করতে পারেন বলে মনে করেন এ কৃষি কর্মকর্তা।