রাজগঞ্জ বাজারে হালখাতায় টাকা পরিশোধকারী কৃষকদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা ব্যবসায়ীদের

0

 

ওসমান গণি. রাজগঞ্জ (যশোর) ॥ ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ কৃষক। এ অবস্থায় বাকি টাকা আদায়ে বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকের কাছে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করা ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতিতে অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীরা। নতুন কৌশল হিসেবে হালখাতায় বাকি টাকা পরিশোধ করলে বিভিন্ন মূল্যবান পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজগঞ্জ বাজারে সার, কীটনাশক, মুদি দোকান, সেচযন্ত্র ও রড সিমেন্টের দোকানসহ প্রায় সব দোকানে হালখাতা হচ্ছে। বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে ধানের বিক্রি দাম ভালো না। এরপর বাজারে চলতি মৌসুমের হালখাতা এখন কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজগঞ্জ অঞ্চলে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারে চালের দামের তুলনায় ধানের ন্যায্য দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। কৃষকেরা বলছেন, চলতি মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলন হলেও উৎপাদন খরচ হয়েছে দ্বিগুণ। ফলে বর্তমান বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে তাতে লাভের চেয়ে লোকসানের শংকায় হতাশার ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে কৃষকদের চোখে মুখে।
তারপরও এসব কৃষকের কাছে বিভিন্ন দোকানের মালিকরা হালখাতার চিঠি দিয়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী আবার হালখাতার নামে লটারির আয়োজন করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। ওই লটারিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে হালখাতায় পাওনা টাকা পরিশোধ করলেই নিশ্চিত পুরস্কার। এমন ঘোষণায় বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। তারপরও পানির দরে ধান বিক্রি করে হালখাতায় অংশগ্রহণ করছেন শুধুমাত্র লটারির বড় পুরস্কারটি পাওয়ার লোভে।
এমনই একটি হালখাতার আয়োজন করেছেন রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আলহাজ শহিদুল ইসলাম। তার ‘উপহার বিতানে’ গত শনিবার লটারির মাধ্যমে হালখাতা অনুষ্ঠিত হয়। যা দেখে সাধারণ মানুষের মাঝে আলোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই বলতে থাকেন যে পাওনা টাকা আদায়ে নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করছেন এ হাড়ি পাতিল ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলছেন ভিন্নকথা, চলতি বছরেই তার ৬লাখ টাকা বাকি রয়েছে। বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য লটারির আয়োজন করে হালখাতার কার্ড দিয়ে দাওয়াত করেছেন প্রায় সাড়ে ৬শ খরিদ্দারকে। দাওয়াত সবাই গ্রহণ করলেও শনিবারের অনুষ্ঠিত হালখাতায় অংশগ্রহণ করেছেন মাত্র ৩৫০জন খরিদ্দার। তবে হালখাতায় খরিদ্দাররা টাকা পরিশোধ না করায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এ ব্যবসায়ী।
এদিকে বাজারে ধানের দাম না থাকায় ধান বিক্রি করতে পারছেন না অনেক কৃষক। তারপরও পাওনাদার চাপে অনেকেই পানিরদরে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। বর্তমান বাজারে ধানের প্রকারভেদে বিক্রয় হচ্ছে বাসমতি ধান ১ হাজার ২শ টাকা, রড মিনিকেট ১হাজার ১শ টাকা, ৬৩ধান ১হাজার ১৫০টাকা, হাইব্রিড ধান ১হাজার টাকা ও মোটা ধান ৯শ থেকে সাড়ে ৯শ টাকা মণ ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। এমন অবস্থায় হালখাতার চাপে বেশ অস্বস্তি বোধ করছেন রাজগঞ্জ অঞ্চলের কৃষক।