যশোরে অস্থির বাজার, ভোক্তারা অসহায়

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।। নিত্যপণ্যের অস্থির মূল্যে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত অগ্নিমূল্যের মুখোমুখি হয়ে কেনাকাটায় ভোক্তাদের সব হিসেব-নিকেষ পাল্টে যাচ্ছে। বাজারে আবারও বেড়েছে পেঁয়াজ,আদা ও সবজির দাম। এদিকে সরকারের নির্ধারণ করা চিনির বিক্রয় মূল্যও ব্যবসায়ীরা মানছে না।  শুক্রবার (১৯ মে) যশোরের বড়বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
গত দেড় মাসে এক দিনও সরকারের নির্ধারণ করা মূল্যে ব্যবসায়ীরা চিনি বিক্রি করেননি। গত ৬ এপ্রিল পরিশোধিত খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ১০৪ টাকা ও পরবর্তিতে ১১ মে কেজিতে আরও ১৬ টাকা বাড়িয়ে ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। শুক্রবার (১৯ মে) বড়বাজারে ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। ১১ মে এর আগে চিনি বিক্রি হচ্ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি দরে।
নতুন ভাতি পেঁয়াজ ওঠার পরও বাজারে ঘাটতির অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত দাম বাড়িয়ে চলেছেন। এ সপ্তাহেও কেজিতে আরও ৫টাকা বাড়িয়ে খুচরা দোকানিরা ৭০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। আদার অবস্থাও একই রকম। গত সপ্তাহে দেশি আদা কেজি প্রতি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, গতকাল শুক্রবার ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। আলুর দাম বেড়ে ৩৫ টাকায় ওঠার পর আর কমেনি।
সবজির দামও আকাশছোঁয়া।  শুক্রবার বড়বাজারে গাজর প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, সজনেডাটা ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, কাকরোল ১০০ টাকা, উচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বেগুন,শসা,বরবটি,ঝিঙে, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারে নতুন বোরো ধানের চাল উঠেছে। এরপরও চালের দাম কমেনি।  শুক্রবার বড়বাজারে স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি মানভেদে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, বিআর-৪৯ ধানের চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, বিআর-২৮ ধানের চাল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা, মিনিকেট ৫৬ থেকে ৬২ টাকা, বাংলামতি ৬২ থেকে ৬৬ টাকা ও কাজললতা ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বড়বাজারে খামারের মুরগির ডিম প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২২০, সোনালি মুরগি ৩৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩৭০ আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। বড়বাজার কাঠেরপুলে রোজার শেষে দাম বাড়ার পর গরুর মাংসের দাম আর কমেনি।  শুক্রবার প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ১০৫০ টাকা।
বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মনিরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘বাড়ি থেকে বাজেট করে বাজারে এসে বাস্তবতায় কেনাকাটায় পরিবর্তন করতে হচ্ছে। প্রতিটা পণ্যই ধরাছোঁয়ার বাইরে। পরিমাণে কমিয়েও এখন বাজার করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা সরকারের নির্ধারণ করা চিনির দামও মানছেন না। আমরা সাধারণ মানুষ এসব ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি। সরকারের তদারকি সংস্থাগুলো মোটেই তৎপর না।’