লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঈদের ছুটির মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চার জেলায় সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আইনজীবী, পিতা-পুত্রসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সাতক্ষীরায় রয়েছেন পিতা ও পুত্রসহ ৫ জন, যশোরের শার্শায় ২ জন, ঝিকরগাছায় ২ জন ও বাঘারপাড়ায় ১ জন, ঝিনাইদহে ২ জন এবং চুয়াডাঙ্গায় ২ জন। উল্লিখিত দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৮ জন। নিহতদের কেউ মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, কেউ মোটরসাইকেল চালানো অবস্থায় অন্য যানবাহনের সাথে সংঘর্ষে ও কেউ মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন সড়কে।
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় দ্রুতগামী পাঁচটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বাবা-ছেলেসহ নিহত হয়েছেন তিনজন। আহত হয়েছেন আরও সাতজন। এছাড়া ঈদের আগের দিন শুক্রবার রাতে তালা উপজেলায় আলাদা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন আরও দুই জন।
রোববার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাতক্ষীরার বাইপাস সড়কের বকচরা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহতরা হলেন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের আজিজুর রহমান সরদারের ছেলে আব্দুল বারি (৫৫), তার ছেলে রেজোয়ান (২৫) ও সাতক্ষীরা সদরের খানপুর গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে মাহমুদুর রহমান (৩৬)।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খানপুর গ্রামের আনিসুর রহমান জানান, তার আত্মীয় মাহমুদ হোসেন একটি মোটরসাইকেলে করে শহরে যাচ্ছিলেন। বাইপাস সড়কের কামালনগর এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে তার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এরপর দুর্ঘটনাকবলিত এই মোটরসাইকেলের সঙ্গে দুই পাশ থেকে আসা আরও তিনটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়।
এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান আব্দুল বারি। আর তার ছেলে রেজোয়ানকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত মাহমুদুর রহমানকে প্রথমে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ও পরে খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতদের মরদেহ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
তালা (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা জানান, তালা উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ভাই নিহত হয়েছে। শুক্রবার ঈদের আগের দিন সন্ধ্যায় উপজেলার হাজরাপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো, ইমরান হোসেন (১৯) ও রিফাত হোসেন (১৬)। তারা তালার মাগুরা গ্রামের আসাদ মোড়লের ছেলে। এ সময় আহত হন একই গ্রামের মিঠু গাজীর ছেলে সুজন গাজী (২৫)। তিনি বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহত মিঠু গাজী বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় পাটকেলঘাটা এলাকা থেকে তারা তিনজন মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বিপরীত দিক থেকে আসা মাইক্রোবাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করে। শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমরান মারা যায়। এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যায় রিফাত।’পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে ঘাতক মাইক্রোবাসটি পালিয়ে যায়।
নাভারণ ও বেনাপোল সংবাদদাতা জানান, যশোরের শার্শা উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন আর আহত হয়েছেন অন্তত চারজন। রোববার (২৪ এপ্রিল) বিকেল থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পৃথক তিনটি দুর্ঘটনায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- শার্শা উপজেলার নাভারণ দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর ছেলে মাহবুবুর হাসান ও উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের গোর্কণ গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে ইকবাল হোসেন। মাহবুবুর ঢাকা জর্জ কোর্টের আইনজীবী ও ইকবাল ঢাকার কাশমে গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ছিলেন।
পুলিশ জানায়, সন্ধ্যায় প্রয়োজনীয় কাজে শার্শার শ্যামলাগাছী গ্রামে যান আইনজীবী মাহবুবুর হাসান। রাত ৮টার দিকে হাইওয়ে সড়ক পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। তিনি পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। স্থানীয়রা উদ্ধার করে র্শাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
একই দিন বিকেলে শার্শার গোড়পাড়া এলাকায় মোটরসাইকেলের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেল আরোহী ইকবাল নিহত হন। এ সময় গুরুতর আহত হন নিহতের বড় ভাই মনিরুজ্জামান।
অপরদিকে রাত সাড়ে ৮টার সময় যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের কাগজপকুর এলাকায় মোটরসাইকলের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় তিন মোটরসাইকেল আরোহী আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শার্শা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানান চিকিৎসক লক্ষ্মীন্দর কুমার দে। তবে আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
নাভারণ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আল মামুন সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সড়কে দুজন নিহত হয়েছেন আর আহত হয়েছেন চারজন। মোটরসাইকেল ও দুটি অটোরিকশার চালককে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।
ঝিকরগাছা (যশোর) সংবাদদাতা জানান, এবারের ঈদযাত্রায় যশোরের ঝিকরগাছায় পৃথক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন ঝিকরগাছা পৌরসদরের মোবারকপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের বড় ছেলে আকিমুল ইসলাম ওরফে মাসুম বিল্লাহ (৫৫) ও গদখালী ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের ইসরাফিল হোসেনের একমাত্র ছেলে কলেজছাত্র সিরাতুল জিহান ইমরান (১৮)।
শুক্রবার (ঈদের আগের দিন) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঝিকরগাছা-মণিরামপুর সড়কে দেবিদাশপুর গ্রামের মণিরামপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খেজুর গাছের সাথে ধাক্কা লেগে মাসুম বিল্লাহ নিহত হন। এদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঝিকরগাছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে মোবারকপুর পারিবারিক কবরস্থানে মাসুম বিল্লাহর লাশ দাফন করা হয়। ওই মোটরসাইকেলে থাকা অপর দুইজন মারাত্মকভাবে আহত হন। তারা বর্তমানে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
অপরদিকে শনিবার (ঈদুল ফিতরের দিন) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে গদখালী থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের বেনেয়ালী গীর্জার সামনে পৌঁছালে যশোর অভিমুখী একটি প্রাইভেটকার পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দিলে কলেজছাত্র সিরাতুল জিহান ইমরান নিহত হন। ঈদেরদিন মাগরিবের নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে ইমরানের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া একইদিন বারবাকপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুর রহিম (৪০) মোটরসাইকেলে বেনাপোল যাওয়ার পথে চারাতলা-নবীবনগর নামক স্থানে পৌঁছুলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। বর্তমানে তিনি ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
বাঘারপাড়া (যশোর) সংবাদদাতা জানান, যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের ধাক্কায় মোটরসাইকেলচালক এক যুবক নিহত হয়েছে। ঈদের দিন শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ছাতিয়ানতলা এলাকায় যশোর-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত নাম আল আমিন (১৯) উপজেলার দোহাকুলা গ্রামের ফরিদুল কবিরের ছেলে। আল আমিন এ বছর বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শনিবার সকালে আল আমিন ঈদের নামাজ আদায় করেন। এরপর তিনি মোটরসাইকেলে করে বড় ভাইকে নিয়ে উপজেলার ছাতিয়ানতলা বাজারে যান। সেখানে বড় ভাইকে পৌঁছে দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যশোর-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি ছাতিয়ানতলা এলাকার কেপি ইটভাটার সামনে মোড় ঘুরতে গেলে একটি ইজিবাইক ওই মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এসময় আল আমিন মহাসড়কের ওপর ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শুভাশীষ রায় সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তুহিন বাওয়ালি বলেন, ইজিবাইকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আল আমিন নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ইমন হোসেন (১৭) ও আজিম উদ্দীন (১৮) নামে দুই তরুণ নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে কালীগঞ্জ-নলডাঙ্গা সড়কের গুঞ্জনগর রাজবাড়ী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইমন সদর উপজেলার আড়মুখ ভিটশ্বর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে। অন্যদিকে আজিম একই গ্রামের জয়নদ্দি বিশ্বাসের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যাক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ইমন ও আজিম দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেলে কালীগঞ্জ শহর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তারা গুঞ্জনগর রাজবাড়ী এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে মেহগনি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ সময় দুজনই সড়কের ওপর ছিটকে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ইমন। আর আজিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা-মুজিবনগর সড়কের গোলাপখালী প্রতিবন্ধী স্কুলের সামনে দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পৌরসভার সীমানা খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে আসমাউল হোসেন (১৭) নামের এক মাদ্রাসাছাত্র নিহত ও ২ জন আহত হয়েছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আসমাউল দর্শনা করিমপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলেও দর্শনা ডিএস ফাজিল মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, এদিন আসমাউল হোসেন তার দুই বন্ধু একই এলাকার সোনা মিয়ার ছেলে রূপম হোসেন (১৭) ও আমির হোসেনের ছেলে নয়নকে (২১) সঙ্গে নিয়ে একই মোটরসাইকেলে চেপে কার্পারাডাঙ্গার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় গোলাপখালী প্রতিবন্ধী স্কুলের সামনে পৌঁছুলে মোটরসাইকেলটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পৌরসভার সীমানা খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা দিলে তারা আহত হয়। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেসে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে আসমাউল হোসেন মারা যায়। দুর্ঘটনায় আহত নয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিলেও রূপমকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কোন অভিযোগ না থাকায় নিহত আসমাউলের লাশ দাফনের জন্যে বাড়িতে নিয়ে গেছে তার পরিবারের সদস্যরা।
অপরদিকে জীবননগর উপজেলার কন্দর্পুর নামক স্থানে দ্রতগতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বাইসাইকেল আরোহী এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী। এ দুর্ঘটনা ঘটে সোমবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে।
দুর্ঘনায় নিহত বাইসাইকেল আরোহী মোশারফ হোসেন (৬০) কন্দর্পুর গ্রামের মরহুম জবেদ আলীর ছেলে। আহত হয়েছেন মোটরসাইকেল চালক একই উপজেলার পুরাতন চাকলা গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে নাজমুল হক (২৪) ও আরোহী পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার লাটিমা গ্রামের আমিনের ছেলে শাকিব (২২)।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, মোশারফ হোসেন বাইসাইকেল চেপে তার আবাদী জমি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ইউপি সদস্য শ্যামলের বাড়ির সামনে পৌঁছুলে দ্রুতগতির মোটরসাইকেল চালক তাকে ধাক্কা দেয়। এতে মোশারফ হোসেন রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে এ দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নাজমুল হক ও আরোহী শাকিব গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দুর্ঘটনার শিকার নিহত মোশারফ হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ দাফন করার জন্যে পরিবারের কাছে দিয়ে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।





