শেষ সময়ে তরুণীরা পোশাকের সাথে ম্যাচিং করে কিনছেন কানের দুল, চুড়িসহ প্রসাধনী

0

আকরামুজ্জামান ॥ ঈদের বাজারে কেনাকাটায় নারীদের বাহারী ডিজাইনের পোশাক ও জুতার পাশাপাশি কসমেটিকস অগাংগিভাবে জড়িত। কসমেটিকস না কিনলে ঈদের কেনাকাটা পূর্ণতা পায়না বলে অধিকাংশ তরুণী মনে করেন। তাই শেষ সময়ে এসে যশোরে কসমেটিকসের দোকানগুলোতে বিভিন্ন বয়সী নারীর উপস্থিতি বেড়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিটি প্রসাধনীর দাম বেশি বলে ক্রেতারা জানান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর শহরের হাজী মুহাম্মদ মহসিন রোডের হাটখোলা রোডে বাবু বাজারের এইচএস প্লাজায় গিয়ে দেখা যায় প্রসাধনীর দোকানগুলোতে তরুণীদের ভিড়। তারা লিপস্টিক, মেকআপ বক্স, নেইল পলিশ, আলতাসহ নানা ধরনের প্রসাধনী কিনছেন। সাজগোজ ছাড়া যেন তরুণীদের ঈদ আনন্দ অপূর্ণই থেকে যায়। তাই তারা শেষ সময়ে এসে পোশাকের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিনছেন কানের দুল, চুড়িসহ নানা প্রসাধনী।
ওই মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সুমাইয়া আক্তার নামে এক তরুণী বলেন, কেনাকাটা সব শেষ। এখন কেবল কিছু কসমেটিকস কেনা বাকি। তাই মার্কেটে এলাম। তবে প্রতিটি প্রসাধনীর দাম অনেক বেশি।
নারী নন্দন নামে কসমেটিকস এন্ড ইমিটেশন জুয়েলারি দোকানের মালিক কামরুল হাসান বলেন, এবার ঈদে তাপদাহের কারণে বেচাকেনা অনেক কম। তবে এখন শেষ সময়ে এসে তরুণীরা কসমেটিকস কিনতে দোকানে আসছেন। তিনি বলেন, আইলাইনার, মাসকারা, আইল্যাশ, নেইলপলিশ, ফেসপাউডার, আইস্যাডো ফেস পাউডার, ফাউন্ডেশন, প্যানকেক, বডি স্প্রে পারফিউম, প্যানস্টিক, শ্যাম্পু, সাবান এসব বেশি কিনছেন তরুণীরা।
তিনি বলেন, কসমেটিকসের ক্ষেত্রে দেশি- বিদেশি কোনো ভাগ নেই। যার যেমন পছন্দ ও সামর্থ্য সে অনুযায়ী ক্রেতারা কিনছেন এসব পণ্য। এর মধ্যে বেশি চলছে গোল্ডেন রোজের পণ্য। নিওর, জ্যাকলিন, লরিয়াল, র‌্যাভলন, মেবলন জর্ডানা, ফ্লোমার, কোম্পানির কসমেটিকস বেশি চলছে।
পাশেই সিটিপ্লাজায় শপিং মলে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণীরা ভিড় করেছেন প্রসাধনীর দোকানগুলোতে। কেউ কিনছেন পছন্দের চুড়ি, কানের দুল ও মেকআপ বক্স। কেউ কিনছেন পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে লিপস্টিক ও নেইলপলিশ। সেখানে দেখা যায় তরুণদের একটি বড় অংশ শেষ মুহূর্তে কিনে নিচ্ছেন পছন্দের আতর ও বডি স্প্র্রে।
প্রসাধনী কিনতে আসা কলেজশিক্ষার্থী ফারহানা তাবাস্সুম তুবা বলেন, ঈদের কেনাকাটা প্রায় শেষ। বাড়ির সবাই পোশাক কিনেছি। আজকে কিছু কসমেটিক সামগ্রী কিনতে এলাম। মেহেদি ও কিছু চুড়ি নিয়েছি। আরও কিছু কেনাকাটা করতে হবে। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিটি প্রসাধনীর দাম বেশি। তারপরও ঈদ বলে কথা! তাই দাম যাই হোকনা কেনো কিছু প্রসাধনী কিনে নিলাম।
বিক্রেতারা বলেন, এ বছর তাপমাত্রার কারণে ক্রেতারা মার্কেটে আসছেন কম। যদিও যারা আসছেন তারা এতোদিন পোশাক কেনার জন্যে। তবে আজ থেকে কসমেটিকসের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। চাঁদ রাত পর্যন্ত বেচাকেনা বাড়বে বলে তারা জানান। বাবু বাজারের এইচএস প্লাজার শিমুল কসমেটিকসের মো. শিমুল বিল্লাল বলেন, বরাবরের মতো এবারও শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা করতে আমাদের দোকানে ক্রেতার সমাগম রয়েছে। তরুণীদের পছন্দের প্রশাসধনীর মধ্যে রয়েছে বডি স্প্রে, কালার কসমেটিক, ফাউন্ডেশন, ফেসওয়াশ, উপটান, নেইল পলিশ, আইলাইনার, লিপলাইনার, মাসকারা, কাজল, আইশ্যাডো ও পারফিউম। এ ছাড়া মেহেদি থাকে মেয়েদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে। তাই ঈদ উপলক্ষে দোকানে মেহেদী বিক্রি হচ্ছে বেশি।
এছাড়া অনেক তরুণী থ্রিপিস ও শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে চুড়ি ও কানের দুল কিনছেন। শায়লা আফরিন নামে এক তরুণী বলেন, আমি ঈদে এবার শাড়ি ও থ্রিপিস দুইই কিনেছি। ঈদের দিন সকালে শাড়ি পরবো। তাই শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে দুইসেট চুরি ও কানের দুল কিনেছি। তবে দাম বেশি বলে তিনি জানান।
ব্যবসায়ীরা বলেন, এ বছর এলসি সমস্যার কারণে তারা বাইরে থেকে মাল আনতে বেশি খরচ করেছে। যেসকারণে কিছু কিছু প্রসাধনীর দাম আগের তুলনায় বেশি। ব্যবসায়ীরা জানান, আগামী চাঁদ রাত পর্যন্ত প্রসাধনীর দোকান জমজমাট থাকবে।