অভয়নগরে কোটা চাতরা বিল কৃষি ও মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্র

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, অভয়নগর (যশোর) ॥ অভয়নগরে তিন শতাধিক পরিবারের ভাগ্যোন্নয়ন ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে যখন পরিবর্তন ঘটতে চলেছে ঠিক তখনই একটি মহল চলিশিয়া ইউনিয়নে কোটা চাতরা বিল কৃষি ও মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য ওই প্রকল্প বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, ৩০৫ জন জমির মালিককে নিয়ে ৪৮৫ বিঘা অনাবাদি জলাবদ্ধ জমিতে কোটা চাতরা বিল কৃষি ও মৎস্য উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্প চালু করা হয় ২০০১ সালে। স্থানীয় জমির মালিকরাই এ প্রকল্পের অংশীদার। প্রকল্প চালুর পর থেকে প্রতি বছর প্রায় ১০ কোটি টাকার মাছ ও ধান বিক্রি করা হয়। যার লভ্যাংশ উপকারভোগী ৩০৫ পরিবারসহ গ্রামের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালে মৎস্য অধিদপ্তর যশোর জেলার মধ্যে সেরা প্রকল্প হিসেবে নির্বাচিত হয় কোটা চাতরা বিল কৃষি ও মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প।
প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল তরফদার জানান, জমির মালিকদেরকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হারি ও লভ্যাংশের টাকা পরিশোধ করা হয়। ৬ বছর পর পর জমির মালিকদের সঙ্গে নতুন করে লিখিত চুক্তিনামা করে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করা হয়। ধারাবাহিক সাফল্যের কারণে গ্রামের একটি কূচক্রি মহল ও চলিশিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম রসুল তরফদার ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোস্তফা কামাল গত ২৮ মার্চ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর একটি যড়যন্ত্রমূলক লিখিত অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
প্রকল্পের উপকারভোগী পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম ইকবাল ও পায়রাহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহম্মদ আলী শেখ জানান, জমিতে কোনো প্রকার ফসল হতো না। যে কারণে জমির মালিকরা ছিল দিশেহারা। কৃষি ও মৎস্য প্রকল্পটি চালুর পর থেকে জমির মালিকদের পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। বর্তমানে একটি দুষ্টচক্র উন্নয়নমূলক এ প্রকল্প বন্ধের অপচেষ্টা শুরু করেছে। যা দুঃখজনক ঘটনা।
প্রকল্পের কোষাধ্যক্ষ শফিয়ার রহমান মোল্যা জানান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যদিয়ে প্রকল্পটি পরিচালনা করা হয়। কিন্তু গত ৬ বছর ধরে একটি কূচক্রি মহল প্রকল্প বন্ধের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে বিভিন্ন দফতরে মিথ্যা অভিযোগ করে আসছে। এই প্রকল্প বন্ধ হলে উপকারভোগী ৩০৫ পরিবারসহ গ্রামের অর্থনীতিতে ধস নামবে। এছাড়া শ শ যুবক তাদের কর্মসংস্থান হারাবে। বন্ধ হবে মাছ ও ফসল উৎপাদন।
শনিবার (১ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে কোটা চাতরা বিল কৃষি ও মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, লিখিত অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার ব্যাপক গরমিল রয়েছে। সরকারি খালের সীমানা ছেড়ে প্রকল্পের বেড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পের ভেতরে বোরো ধানের বাস্পার ফলন হয়েছে। এ সময় উপস্থিত জমির মালিকরা জানান, তারা আগামী ৬ বছরের জন্য প্রকল্পের সঙ্গে স্বেচ্ছায় চুক্তি করেছেন। এছাড়া গ্রামবাসীর অর্থায়নে প্রকল্প সংলগ্ন সয়াল ঘাটের রাস্তায় মাটি ফেলে সংস্কার করা হয়েছে।
অভিযোগকারী ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল জানান, প্রকল্পের বিষয়ে ইউএনও বরাবর যে অভিযোগ করা হয়েছে তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্যঘের স্থাপনা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন জানান, উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।