চৌগাছায় আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি

0

এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৮০ ভাগ অর্জিত হলেও ধান সংগ্রহে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। খাদ্য গুদামে ধান বিক্রিতে নানা সমস্যার পাশাপাশি ধানের সরকারি ক্রয় মূল্য থেকে খোলাবাজার মূল্য বেশি হওয়ায় গুদামে ধান দেননি কৃষক।
উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়,গেল আমন মৌসুমে উপজেলা খাদ্য গুদামে কেজি প্রতি ২৮ টাকা দরে ৬৫২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ ধান সংগ্রহ অভিযান ১৭ নভম্বের ২০২২ থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় ৭ মার্চ ২০২৩। ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রান্তিক কৃষকরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে (২৮ টাকা) তাদের উৎপাদিত ধান সরাসরি খাদ্যগুদামে বিক্রি করার কথা। কিন্তু তাদের অভিযোগ সকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় সরকারের কাছে কেউ ধান বিক্রি করেনি। ফলে একদানা ধানও পড়েনি সরকারি গুদামে। কোনো কৃষক খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি না করায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ভাগ শূন্য।
এ ব্যাপারে উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের আন্দুলিয়া গ্রামের কৃষক কবির হোসেন বলেন, আমার বাড়ি থেকে উপজেলার খাদ্যগুদামের দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমটিার। পরিবহন ব্যয় বেশি হওয়ায় আমরা সরকারকে ধান দিতে পারিনি। এছাড়া এবার খোলা বাজারে ধানের মূল্য বেশি। তাই গুদামে ধান দেইনি।
উপজেলার সিংহঝুলী গ্রামের কৃষক আবু তৈয়ব বলেন, যে বছর ধানের সরকারি মূল্য বেশি থাকে সে সময় খাদ্যগুদামে ধান নিয়ে গেলে গুদাম কর্তৃপক্ষ ধান ভেজা বা চিটা আছে বলে নিতে চায় না। আবার ভ্যান খরচ করে ফেরত আসতে হয়। নানা সমস্যার পাশাপাশি ধানের সরকারি ক্রয় মূল্য থেকে খোলাবাজার মূল্য বেশি হওয়ায় গুদামে ধান দেননি তিনি।
এদিকে কেজি প্রতি ৪২ টাকা দরে দুইবারে মোট ৭৭৬.০৮০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চালের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, উপজেলার চুক্তিবদ্ধ সচল মিল মালিকরা তাদের বরাদ্দকৃত চাল গুদামে সরবরাহ করবেন। এ বছর দেখা গেছে, চালের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৬০৫.৬৩০ মেট্রিক টনের কাছাকাছি। এ উপজেলায় চুক্তিবদ্ধ মিলারের সংখ্যা ৩৫ জন হলেও মাত্র ১৬ জন মিলার চাল সরবরাহ করেছেন।
এ ব্যাপরে উপজেলার পুড়াপাড়া গ্রামের চুক্তিবদ্ধ মিল মালিক আব্দুল আলীম বলেন, উপজেলায় প্রায় ৬২ জন মিল মালিক রয়েছেন। তার মধ্যে ৩৫ জন মিলার চুক্তিবদ্ধ হলেও গুদামে চাল দিয়েছি আমরা ১৬ জন । তিনি বলেন, খোলা বাজারে দাম বেশি হওয়ায় অনেকে চুক্তি করেও পরে চাল দেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ফাতেমা সুলতানা বলেন, হাট- বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কোনো কৃষক গুদামে ধান সরবরাহ করেনি। ফলে গুদামে ধান ক্রয় সম্ভব হয়নি। চুক্তিবদ্ধ মিলাররা সবাই চাল সরবরাহ না করায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। যেসব চুক্তিবদ্ধ মিলার গুদামে চাল সরবরাহ করেননি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলমান।